হাতে তৈরি ইনকিউবেটরে রাখা ডিমের ওপর টানা ৬৫ দিন ধরে চলে নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ। তারপর সেখানে ফুটল অজগরের ১১ বাচ্চা। শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় ডিম ফেটে একে একে বাচ্চাগুলো বের হয়ে আসে। এবার নিয়ে তিনবার ইনকিউবেটরে ৬৫ অজগরের বাচ্চা ফুটল।

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় বিশেষ যত্নে ছানাগুলো বড় হলে সেগুলো গহিন বনে মুক্ত পরিবেশে ছেড়ে দেওয়া হবে। দেশে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানাই এভাবে সাপের ডিম থেকে কৃত্রিম উপায়ে বাচ্চা উৎপাদন করে বিরল নজির সৃষ্টি করেছে। আর কৃত্রিম উপায়ে বাচ্চা তৈরির কাজটি করে যাচ্ছেন চিড়িয়াখানার কিউরেটর নিজেই।

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ বলেন, ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর জন্য ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ও ৮৫ শতাংশ আর্দ্রতা ধরে রাখার বিষয়টি অনেক বড় চ্যালেঞ্জের ছিল। নানা প্রতিকূলতার পরও একসঙ্গে এত ডিম থেকে সাপের বাচ্চা ফোটাতে পেরে আনন্দ লাগছে। সদ্য জন্ম নেওয়া সব বাচ্চা সুস্থ ও ভালো আছে।

তিনি জানান, সাধারণত জন্মের ১৫ দিনের মধ্যে সাপের বাচ্চা চামড়া বদল করে। ততদিন এগুলোকে ইনকিউবেটরে রেখেই রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে। চামড়া বদল করার পর তাদের প্রয়োজনীয় খাবার দিতে হয়। পরে তাদের বনে প্রাকৃতিক পরিবেশে ছেড়ে দেওয়া হবে।

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় এর আগে ২০২১ সালের ২৩ জুন ২৮টি এবং ২০১৯ সালের ১৩ জুন ২৬টি অজগরের বাচ্চা জন্ম নেয়। ভালো রক্ষণাবেক্ষণের কারণে জন্মের পর সবক'টি বাচ্চাই ভালোভাবে বেড়ে ওঠে। পরে এগুলোকে বন্য পরিবেশে অবমুক্ত করা হয়।

চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ জানান, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার মতো দেশের অন্য কোনো চিড়িয়াখানায় সাপের ডিম সংগ্রহ করে ইনকিউবেটরে কৃত্রিম উপায়ে বাচ্চা ফোটানো হয় না। তিন বছরে আমরা ৬৫টি অজগরের বাচ্চা ফুটিয়েছি। তিন মাস তাদের পর্যবেক্ষণে রাখার পর প্রাকৃতিক বন ও অভয়ারণ্যে ছেড়ে দেওয়া হয়।

১৯৮৯ সালে চট্টগ্রাম নগরের ফয়'স লেকের পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত এ চিড়িয়াখানায় ২২টি অজগরসহ সাড়ে ছয় শতাধিক প্রাণী রয়েছে।