- সারাদেশ
- সিলেটে বন্যার অবনতি, পানি বাড়ছে উত্তরে
সিলেটে বন্যার অবনতি, পানি বাড়ছে উত্তরে

ফাইল ছবি
দেশে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বৃষ্টির কারণে সিলেট অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। উত্তরাঞ্চলেও বাড়ছে নদনদীর পানি। আসাম ও পশ্চিমবঙ্গে ভারি বৃষ্টির কারণে সুরমা নদীর সবগুলো পয়েন্টে পানি কয়েক ইঞ্চি বেড়েছে। বৃহস্পতিবার দেশের সাত জেলার ৯ নদীর ১০ পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ওপরে ছিল। কয়েক দিন আগে বিপৎসীমার ওপরে ছিল সাত পয়েন্টের পানি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই পয়েন্টে সুরমা বিপৎসীমা থেকে মাত্র দশমিক শূন্য ২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। অবশ্য কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি ২৪ ঘণ্টায় আরও ১২ সেন্টিমিটার কমেছে। তারপরও কানাইঘাটে সুরমা বিপৎসীমার দশমিক ৭২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ধলাই নদীর পানি ২৪ ঘণ্টায় দশমিক ২৬ সেন্টিমিটার বেড়েছে। তবে কুশিয়ারা নদী অমলসিদ, শেওলা ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও পানি কমার প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে।
সুনামগঞ্জের ছাতকের বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হচ্ছে। সুরমা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় উপজেলার নিম্নাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ফলে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন।
কিশোরগঞ্জের সবক'টি উপজেলায় গত দু'দিন টানা ভারি বৃষ্টির কারণে পানি বেড়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, জেলায় কালনী-কুশিয়ারায় বিপৎসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। মেঘনা নদীর পানি কমলেও ভৈরব পয়েন্টে ৫ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমলেও ১১ দশমিক ৫২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে পুরো জেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়াসহ হাওরের বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার মৃগা, আমিরগঞ্জ, লাইম পাশা, শান্তিনগর, হাজীপুর, কালীপুর, আনন্দবাজার, মৃগা বাজার, মৃগা ইউনিয়ন পরিষদে নতুন করে পানি ঢুকছে।
বৃহস্পতিবার লালমনিরহাটের শিমুলবাড়ি পয়েন্টে ধরলার পানি বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। নদী তীরবর্তী সদর উপজেলার মোগলহাট ও কুলাঘাট ইউনিয়নের বেশ কিছু চরাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়েছে।
উজানের ঢল ও কয়েক দিনের বর্ষণের ফলে দিনাজপুরের নদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে বেশ কিছু আবাদি জমি ও গাছপালা নদীতে বিলীন হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী ঢাকা, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি দু-এক দিন অবনতি হয়ে তারপর উন্নতি হতে পারে। আর তিস্তা অববাহিকার বন্যা পরিস্থিতি বেশি অবনতি হওয়ার আশঙ্কা আছে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন সিলেট ব্যুরো, কিশোরগঞ্জ অফিস, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, ছাতক (সুনামগঞ্জ) ও মিঠামইন (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি]
মন্তব্য করুন