রাজবাড়ী শহরের সজ্জনকান্দা বড়পুল এলাকায় সাবেক জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আজিজা খানমের বাসায় গত শুক্রবার রাতে আটটি নাইট কুইন ফুল ফুটেছে। এরপরই চারদিকে ফুলগুলোর মিষ্টি ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবেশীরা ফুল দেখতে ভিড় জমান তাঁর বাড়িতে। সাদা রঙের ফুলের ভেতর ঘি রঙের আবরণ। সেই সঙ্গে মিষ্টি ঘ্রাণ- সত্যিই যেন অসাধারণ!

আজিজা খানম জানান, সাত-আট বছর আগে তিনি শখ করে একটি নাইট কুইন ফুলের চারা টবে লাগিয়েছিলেন। তিন বছর ধরে গাছটিতে ফুল ফুটছে। এ ফুল মাত্র এক রাতের জন্য ফোটে। সন্ধ্যার পর কলি থেকে ফুলের পাপড়িগুলো ছড়াতে থাকে। মাঝ রাতের পর আপনাআপনিই পাপড়িগুলো ঘুমিয়ে যায়। তিনি বলেন, এবার অনেক কলি এসেছে। এর মধ্যে শুক্রবার রাতেই ফুটেছে আটটি। ফুলের বৃন্তগুলো পাতার সঙ্গে। পাতা কীভাবে এত বড় ফুলের ভার সইতে পারে, সেটিই আশ্চর্যের। আজিজা খানম জানান, তাঁর বাড়ির নাইট কুইন ফুল সাধারণত বর্ষাকালেই ফোটে।

জানা গেছে, এই ফুলের বৈশিষ্ট্য অন্য যে কোনো ফুলের তুলনায় একটু ভিন্ন। বছরে মাত্র এক রাতের কোনো এক সময় ফোটাই এর স্বভাব। নাইট কুইন নিজেকে আত্মপ্রকাশ ও বিকশিত করে রাতে। রাতের অন্ধকারেই হয় তার জীবনাবসান। এ কারণে ফুলটিকে সচরাচর দেখা যায় না। এই ফুল দিনের আলো সইতে পারে না। হয়তো এ কারণে সবাই এ ফুলকে নাইট কুইন বা 'রাতের রানী' বলে চেনেন।

চারা থেকে গাছ ফুল ফোটার উপযোগী হওয়া পর্যন্ত সময় লাগে তিন থেকে চার বছর। এ ফুলের গাছ পাথরকুচির মতো পাতা থেকে অঙ্কুরিত হয়। একটি পাতা নরম মাটিতে রেখে দিলে ধীরে ধীরে ওই পাতা থেকে অঙ্কুর বের হয়। পরে তা গাছে পরিণত হয়। একটি পাতা থেকে একাধিক গাছ জন্মাতে পারে। প্রথমে পাতার যে কোনো দিকে ছোট একটি গুটির মতো বের হয়। এই গুটি আস্তে আস্তে বড় হয়। ১৪ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে সেই গুটি কলিতে রূপান্তরিত হয়। এভাবে ক্রমেই পুষ্ট হয় কলি। যে রাতে ফুটবে, সেদিন বিকেলেই কলিটি অদ্ভুত সুন্দর সাজে সজ্জিত হয়।