সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ম্ফোরণের এক মাস পর প্রকাশ্যে এলো কর্তৃপক্ষ। বিভাগীয় কমিশনার গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের এক দিনের মাথায় গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে হঠাৎ করেই নগরের একটি রেস্তোরাঁয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা আহ্বান করে মালিকপক্ষ। তবে এতদিন পর প্রকাশ্যে এলেও এত প্রাণহানির দায় কার, মামলায় হাত-পা হারানো কয়েকজনকে আসামি করা, তদন্ত প্রতিবেদনে বিএম কর্তৃপক্ষের দায় থাকার কথা উঠে আসাসহ অনেক প্রশ্নের উত্তর দেননি স্মার্ট গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক মেজর (অব.) শামসুল হায়দার সিদ্দিকী। কোনো কোনো প্রশ্নের জবাবে নীরব ছিল মালিকপক্ষ, আবার কোনোটার উত্তর দিয়েছে কৌশলে। এতদিন মালিকপক্ষ প্রকাশ্যে আসেনি কেন- এমন প্রশ্নও এড়িয়ে যান বিএম ডিপোর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। এ সময় বিএম ডিপোর মহাব্যবস্থাপক মাইনুল আহসান, পরিচালক শফিকুর রহমান, ইয়াসিন মজুমদারসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় সভায় বিএম ডিপোর কাছে ২৫টি সংস্থারই হালনাগাদ লাইসেন্স, ছাড়পত্রসহ যাবতীয় কাগজপত্র থাকার দাবি করেন স্মার্ট গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক মেজর (অব.) শামসুল হায়দার সিদ্দিকী।

বিএম ডিপোর দায় থাকার কথা উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া প্রসঙ্গে শামসুল হায়দার সিদ্দিকী বলেন, আমরা এখনও কোনো সরকারি সংস্থার তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাইনি। তদন্ত প্রতিবেদন ও পরামর্শ-সুপারিশ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) দেওয়া রিপোর্ট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি সরকারের একটি অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট ছিল। আমরা তাদের কাছে এ প্রসঙ্গে জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা এ-সংক্রান্ত কিছুই আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেনি। সভায় শামসুল হায়দার সিদ্দিকী বিএম ডিপোতে সিসিটিভি সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, এটি এখন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের অভিজ্ঞ লোক দিয়ে ডিপোর ফায়ার লাইনের কাজগুলো এখন চলমান।
শামসুল হায়দার সিদ্দিকী বলেন, ২০১০ সালে দেশি-বিদেশি প্রায় ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে বিএম ডিপো প্রতিষ্ঠা হয়। এরপর ২৫টি সংস্থারই লাইসেন্স ও ছাড়পত্র নিয়ে কমপ্লায়েন্স মেনে ডিপোর অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। বর্তমানেও সব প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স ও ছাড়পত্র হালনাগাদ রয়েছে। সব ধরনের লাইসেন্স ও ছাড়পত্রের কপি সরকারি সব তদন্ত কমিটিকে দেওয়া হয়েছে। এ সময় ভয়াবহ বিস্ম্ফোরণের ঘটনায় অগ্নিকাণ্ডে হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন শামসুল হায়দার সিদ্দিকী। তিনি জানান, শতাধিক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বিএম ডিপোর কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়েছে। ইতোমধ্যে ডিপোতে অক্ষত থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মূল্যবান আমদানি-রপ্তানি পণ্য খালাসের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।