সাড়ে ৪৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের খুলনা মহানগরীতে বিনোদন কেন্দ্রের অভাব কতটা প্রকট, সদ্য সমাপ্ত ঈদে আবারও তা ফুটে উঠেছে। নামমাত্র কয়েকটি পার্ক ১২ লাখের বেশি মানুষের বিনোদনের তৃষ্ণা মেটাতে পারেনি। তাই ঈদের ছুটিতে মানুষ পরিবার নিয়ে ছুটে গেছেন রূপসা ও ভৈরব নদের পাড়সহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক পরিবেশে।

এসব বিষয় মাথায় নিয়ে রূপসা নদীর পাড়ে নতুন একটি বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে খুলনা সিটি করপোরেশন। জার্মান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-কেএফডব্লিউ এ খাতে দেড় কোটি টাকার বেশি অনুদান দিয়েছে। বর্তমানে নকশা তৈরি করছে পরামর্শক সংস্থা। আগামী বছরের শুরুতে কাজ শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কেসিসি থেকে জানা গেছে, বর্তমানে নগরীতে কেসিসির ৭টি পার্ক রয়েছে। এর মধ্যে গল্লামারী লিনিয়ার পার্ক ও খালিশপুর শিশু পার্ক দুটি প্রতিষ্ঠানের কাছে ইজারা দেওয়া হয়। নগরীর জাতিসংঘ শিশু পার্ক, গোলকমনি, সোনাডাঙ্গা ও নিরালা পার্কে দুই সেট করে দোলনা ও কয়েকটি স্লিপার ছাড়া কিছুই নেই। এর মধ্যে জাতিসংঘ পার্ক ছাড়া বাকি ৩টি পার্কেরই ভগ্নদশা। বিনোদনের নূ্যনতম পরিবেশ নেই বাকি তিনটি পার্কে। নগরীর সোনাডাঙ্গা সোলার পার্ক ও হাদিস পার্কে দুটি পুকুর, কিছু বেঞ্চ ছাড়া কিছুই নেই। ঈদের ছুটিতে এসব স্থানে বেড়াতে গিয়ে হতাশ হয়ে ফিরতে হয় নগরবাসীকে।
কেসিসির পরিকল্পনা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি জার্মান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সহযোগিতায় 'ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যাডাপটেড আরবান ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট-২' নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে কেসিসি। এই প্রকল্পের একটি অংশে রূপসা পুরোনো ফেরিঘাটের বাম পাশে নদীর তীরে বিনোদন কেন্দ্র তৈরি করা হবে। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে কেএফডব্লিউ দেবে ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ও বাকি ৮২ লাখ টাকা দেবে সরকার। এ নিয়ে স্থানীয় সরকার ও কেসিসির সঙ্গে কেএফডব্লিউর চুক্তি হয়েছে।
কেসিসির প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবিরুল জব্বার জানান, ২০১৪ সালে নগর অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পের রূপসা পুরোনো ফেরিঘাট এলাকা সংস্কার, বাস টার্মিনাল ভবন নির্মাণ ছাড়াও নদীর পাড় উন্নয়নে অর্থায়ন করেছিল কেএফডব্লিউ। নদীর পাড়ে একটি অংশ বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে ইজারা দেওয়া হয়েছে। এর পাশেই আরও ১০০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৮০ ফুট প্রস্থের জায়গা নিয়ে নতুন আরেকটি বিনোদন কেন্দ্র করা হবে।
তিনি জানান, প্রকল্পের আওতায় রূপসা পাড়ে সুরক্ষা প্রাচীর নির্মাণ, নদীর তীর বাঁধাই ও উন্নয়ন, পাড় ভরাট করে বেঞ্চ, পার্কিং টাইলস ও বাগান তৈরিসহ বিভিন্ন বিনোদন উপকরণ থাকবে। প্রকল্পটি অনুমোদন হলে ডিজাইন করার জন্য পরামর্শক নিয়োগ করা হবে। আগামী জানুয়ারি থেকে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু হতে পারে।