কাশিয়ানী উপজেলায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সরকারি শ্রীকৃষ্ণ কলেজ রামদিয়ার (এসকে কলেজ) জায়গায় বহুতল ভবন নির্মাণকাজ চলছে। এতে ওই জমির দখল হারাচ্ছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।

কলেজের অফিস সহায়ক আজিবর মোল্লার আবেদনের পরই আদালত থেকে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে স্থিতাবস্থার আদেশ দেওয়া হয়েছিল।
কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৪২ সালে অর্থাৎ ৮০ বছর আগে রামদিয়া বাজার এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা কলেজের নামে জায়গা দলিল করে দিয়ে যায়। পরে কলেজ কর্তৃপক্ষ নিয়মিত ওই জমির খাজনা পরিশোধ করে আসছে এবং কলেজের নামে সবগুলো মাঠ জরিপ রয়েছে। ওই জায়গার দলিল কলেজের নামে রয়েছে। কয়েক মাস ধরে ওই বাজারের ব্যবসায়ী নিউটন পাল (৩৫) এবং কানন বালা (৫৫) কলেজের জায়গায় ভবন নির্মাণের চেষ্টা করছেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গোপালগঞ্জ সহকারী জজ আদালতে নিষেধাজ্ঞার আবেদন করে মামলা করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। ১৩ জুলাই আদালতের বিচারক কলেজের পক্ষে স্থিতাবস্থার রায় দেন। রায়ে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে আদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু নিউটন পাল আদালতের আদেশ অমান্য করে বহুতল ভবনের নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

গতকাল শুক্রবার সরেজমিন দেখা যায়, কাশিয়ানী উপজেলার বেথুড়ী ইউনিয়নের রামদিয়া বাজার জেলা পরিষদ ডাক বাংলোর উত্তর পাশে রামদিয়া-ওড়াকান্দি সড়কের রামদিয়া বাজার ব্রিজের পশ্চিম পাশে রাস্তার ওপর বালু রাখা আছে। বিরোধপূর্ণ জায়গায় ওই বহুতল ভবনের নির্মাণকাজ চলছে। কয়েকজন শ্রমিক সেখানে কাজ করছেন।

ওই জায়গায় বহুতল ভবন নির্মাণকারী নিউটন পাল বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ যে সম্পত্তি তাদের দাবি করছে, তা তাদের নয়। এই সম্পত্তি ছিল সাবেক জমিদারদের। জমিদাররা এখান থেকে চলে গেলে ওইসব সম্পত্তির মালিক হয়ে যায় সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসক। এ ছাড়া কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি ৩৮০ দাগে তিনি (নিউটন) কাজ করছেন, ফলে ৩৮৩ দাগে তাদের কোনো আপত্তি থাকার কথা নয়।

সরকারি শ্রীকৃষ্ণ কলেজের (এসকে কলেজ) অধ্যক্ষ অধ্যাপক জামান হোসেন বলেন, ৩৮০, ৪২২ ও ৪২৩ দাগে কলেজের জায়গা। নিউটন পাল কলেজের জায়গায় ভবন নির্মাণ করছেন। তিনি (অধ্যক্ষ) এ বিষয়ে উপজেলা প্রশসনকে জানিয়েছেন। কাশিয়ানীর সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) এসে কলেজের জায়গার সীমানা নির্ধারণ করে দিয়ে গেছেন। এ সময় সেখানে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন, এমনকি নিউটন পাল ও কানন বালাও ছিলেন। এর পরও তারা ক্ষমতা দেখিয়ে ভবন নির্মাণ করছেন। ১৩ জুলাই আদালত যে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন, তা অমান্য করে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি নিষেধাজ্ঞার কাগজ থানায় দিলেও পুলিশ তাদের কাজ বন্ধ করতে বাধা দেয়নি।

এ বিষয়ে জানতে কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সওগাতুল আলমের কাছে গেলে বলেন, তিনি গত বৃহস্পতিবার রাতে এ থানায় যোগদান করেছেন, এ বিষয়ে তিনি এখনও কিছু জানেন না। থানার পরিদর্শক (তদন্ত ) ফিরোজ বলতে পারবেন।

পরিদর্শক (তদন্ত ) ফিরোজের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তারও কিছু জানা নেই।
রামদিয়া পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বে থাকা পুলিশ পরিদর্শক বাবুল আক্তারের মোবাইল ফোনে বারবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।