চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার জঙ্গল সলিমপুর এলাকা পরিদর্শনে যাওয়া সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের গাড়িবহর থেকে এক ইউপি সদস্যকে নামিয়ে মারধর করেছে দুর্বৃত্তরা। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় জঙ্গল সলিমপুর থেকে ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটে। 

পাহাড়ি ওই এলাকায় সরকারি মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ঠেকাতে অবৈধভাবে জমি দখলে রাখা স্থানীয় সন্ত্রাসী বাহিনী এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

মারধরের শিকার মোহাম্মদ আরিফ সলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। মাথা, হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত আরিফকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় লোকজন ও সরকারি কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রাম নগর সংলগ্ন সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরে একটি মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার ওই এলাকায় স্থানান্তরের পাশাপাশি সেখানে একটি ইকোপার্ক, স্টেডিয়াম ও বেতার ভবন গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। 

এ ছাড়া বিশ্বমানের হাসপাতাল, আইকনিক মসজিদ, জাতীয় তথ্য কেন্দ্র, নভোথিয়েটারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এজন্য কিছুদিন আগে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ রেজাউল করিম চৌধুরীসহ সরকারি শীর্ষ কর্মকর্তারা ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তবে সরকারি এ এলাকা অবৈধভাবে দখলে রেখেছে স্থানীয় ইয়াছিন বাহিনীসহ কয়েকটি সন্ত্রাসী দল। সরকারি খাসজমি ব্যবসাসহ নানা অপরাধে জড়িত এসব বাহিনীর সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে এ হামলা চালিয়েছে।

সলিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন আজিজ জানান, সরকারি মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন নিশ্চিতে শুক্রবার সন্ধ্যায় জঙ্গল সলিমপুর এলাকা পরিদর্শনে যান স্থানীয় সরকার বিভাগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপপরিচালক (রাজস্ব), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ), সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)। ফেরার পথে গাড়িবহর থেকে নামিয়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে ইউপি সদস্য আরিফকে বেধড়ক মারধর করে সন্ত্রাসী ইয়াসিনসহ তার বাহিনীর লোকজন। ওই সময় তার ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটিও ভাঙচুর করা হয়।

আহত ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আরিফ বলেন, ‘সন্ত্রাসী ইয়াসিন আমার শরীরে বন্দুক ঠেকিয়ে তার বাহিনীর লোকজন দিয়ে মারধর করেছে। তারা মারতে মারতে বলতে থাকে, এখানে কেউ আসতে পারবি না। তুই আমাদের নাগরিক সনদ ও জন্মসনদ দিতে গড়িমসি করিস।’

তিনি জানান, সরকারি কর্মকর্তাদের সামনে তাঁকে মারধর করে এই বার্তা দেওয়া হয়েছে, এটা তাদের এলাকা। এখানে কেউ প্রবেশ করতে পারবে না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন বলেন, বহরের সবার শেষে ছিল চেয়ারম্যানের গাড়ি। সেই গাড়িতে ইউপি সদস্য আরিফ ছিলেন। কিছু লোকজন গাড়ি থেকে নামিয়ে নাগরিক সনদের কথা বলে তাঁকে মারধর করে। পরবর্তীতে আমরা এগিয়ে গেলে তারা পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।