- সারাদেশ
- সাঘাটা-ফুলছড়িতে ‘ভেলু ভাই’ হলেন যেভাবে
ফজলে রাব্বী মিয়া
সাঘাটা-ফুলছড়িতে ‘ভেলু ভাই’ হলেন যেভাবে

অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া
জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও গাইবান্ধা- ৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনে সাতবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েছেন স্থানীয় মানুষ। তাঁর স্মৃতি স্মরণ করছেন অনেকে।
ফজলে রাব্বী মিয়ার বাল্য বন্ধু হোসেন আলী মুন্সি তার বাল্য স্মৃতি স্মরণ করে কেঁদে ফেলেন। তিনি জানান, ‘বাল্যকালে তিনি খুব দূরন্ত ছিলেন, ভালো ছাত্রও ছিলেন। একদিন একটি গাছের সব আম বন্ধুদের মধ্যে বিলিয়ে দিয়েছিলেন। সেটা নিয়েও সে সময় ভীষণ হুলস্থুল হয়েছিল। সৎ ও আদর্শ একজন সাধারণ মানুষ ছিলেন আমার বন্ধু।
অপর সহপাঠী বন্ধু ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া এলাকার বাসিন্দা মো. শামছুল হক বলেন, আমার বন্ধু ফজলে রাব্বী মিয়া ভেলু একজন জনদরদী মানুষ ছিলেন। কখনই তিনি খালি হাতে কাউকে ফিরিয়ে দেননি। স্কুলজীবন থেকেই তার মধ্যে এই গুণ ছিল। স্কুলজীবনে তিনি ইংরেজিতে পারদর্শী ছিলেন। অংশ নিতেন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে। ইংরেজি কবিতা আবৃত্তি করে স্কুলে পুরস্কারও অর্জন করতেন।
তিনি বলেন, স্কুলে সবচেয়ে বেশি কথা বলতেন ফজলে রাব্বী মিয়া। ভেলুয়েবল (যুক্তিসম্পন্ন) কথা বলার কারণে সহপাঠীদের একজন তার নাম দেন ‘ভেলু’। বন্ধুরা তাকে ‘ভেলু’ বলে ডাকতে শুরু করে স্কুলজীবন থেকেই। তবে আইনজীবী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার পর নিজেকে ভেলু উকিল হিসেবেও পরিচয় দিতেন তিনি। এলাকার কোথাও কাউকে ফোন করলে ‘ভেলু বলছি’ বলে পরিচয় দিতেন। তিনি কারও কাছে ‘ভেলু’, কারও কাছে ‘ভেলু ভাই’, ‘ভেলু চাচা’, ‘ভেলু দাদা’ হিসেবে জনপ্রিয়। তাঁর মৃত্যুর খবর এলাকার পৌঁছার পর অনেকেই কেঁদেছেন।
উল্লেখ্য, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার (২২ জুলাই) বেলা ৪টায় নিউইয়র্কের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি ১৯৮৬ সালের তৃতীয়, ১৯৮৮ সালের চতুর্থ, ১৯৯১ সালের পঞ্চম ও ১২ জুন ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পরাজিত হন। ২০০৮ সালের নবম, ২০১৪ সালের দশম ও ২০১৯ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসন থেকে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯০ সালে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি। দশম সংসদ থেকে তিনি আমৃত্যু ডেপুটি স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মন্তব্য করুন