- সারাদেশ
- বিরামপুরে পদ্মার মৃত্যু, সুস্থ আছে স্বপ্ন ও সেতু
বিরামপুরে পদ্মার মৃত্যু, সুস্থ আছে স্বপ্ন ও সেতু

হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নেওয়ার দিন স্বজনদের কোলে স্বপ্ন-পদ্মা ও সেতু
দিনাজপুরের বিরামপুরে একসঙ্গে জন্ম নেওয়া স্বপ্ন, পদ্মা ও সেতু নামে তিন শিশুর মধ্যে পদ্মা মারা গেছে। তবে বাকি দুই শিশু সুস্থ আছে বলে জানা গেছে। শনিবার বিকেলে তিন সন্তানের মধ্যে পদ্মার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার বাবা জাহিদুল ইসলাম।
জাহিদুল ইসলাম দিনাজপুর বিরামপুর উপজেলার ৫নং বিনাইল ইউনিয়নের কৃষ্ণবাটী এলাকার বাসিন্দা। গত ১৮ জুলাই দুপুর ১২টায় তার স্ত্রী সাধিনা বেগম একই উপজেলার ইমার উদ্দিন কমিউনিটি হাসপাতালে একসঙ্গে তিন কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। তাদের নাম রেখেছিলেন স্বপ্ন-পদ্মা-সেতু।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমি আমার বাচ্চাগুলোকে দেখে বাজারে গেলাম। তাদের জন্য কিছু কাগজ কিনতে। রাতে বাচ্চাগুলো পায়খানা-প্রস্রাব করে। যাতে ভিজে না যায় তাই কাগজ কিনতে যাওয়া। পরিবারের জন্য কিছু ডিমও কিনতে গেছিলাম। বাজারে গেলে আমার স্ত্রী ফোন দিল, পদ্মা (দ্বিতীয় সন্তান) কেমন জানি করছে। বাড়িতে আসার পথটাই বড় হয়ে গেল। আর পদ্মাকে দেখতে পেলাম না। আমার বাচ্চাগুলো সুস্থই ছিল। কিভাবে যে আমার পদ্মা মারা গেল আল্লাহই ভালো জানেন। স্বপ্ন আর সেতু এখন সুস্থ আছে, স্ত্রীও সুস্থ আছে। আজকে আমার ঢাকা যাওয়ার কথা ছিল। পদ্মাকে হারিয়ে আর যাওয়া হলো না।
তিনি জানান, তিনি তার স্ত্রী সাধিনা বেগমকে নিয়ে ঢাকার গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। তার সংসারে ১৪ বছর বয়সী একটি কন্যা রয়েছে। চলতি মাসের ৭ তারিখে সন্তান প্রসবের জন্য তার স্ত্রীকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। পরে চলতি মাসের ১৮ জুলাই দুপুরে বিরামপুর উপজেলার ইমার উদ্দিন কমিউনিটি হাসপাতালে একসঙ্গে তিন সন্তান প্রসব করেন তার স্ত্রী। একইদিন সাধিনা বেগম ও তিন সন্তানের উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল হাসপাতেল নিয়ে যাওয়া হয়। এই সময় তিনি ঢাকায় ছিলেন। মেডিকেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তিন শিশুকে শিশু ওয়ার্ডে ইনকিউবেটরে রাখে। এরপর তিনি ঢাকা থেকে সরাসরি মেডিকেল আসেন। তিনদিন চিকিৎসার পর গত ২১ জুলাই সুস্থ সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে তিনি বাড়ি যান।
এই বিষয়ে কথা হলে পল্লী চিকিৎসক মামুনুর রশিদ জানান (বাচ্চাগুলোর চিকিৎসা করছিলেন), আমি বাচ্চাগুলোকে সুস্থই দেখেছি। তারা সুস্থই ছিল। আমার ডাক্তারি অভিজ্ঞতায় মনে হয় পেটে গ্যাসের কারণে মৃত্যু হয়েছে তার। আমি তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিমল কুমার সরকার বলেন, আমি ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। আমি চেয়াম্যানকে বলেছি, তাদের যদি কোনো প্রকার সহযোগিতা প্রয়োজন হয় তবে আমাকে জানাতে। আমি বলেছি বাকি দুই সন্তানকে তারা যেন হাসপাতালে ভর্তি করায়। আমরা সবধরনের সহযোগিতা তাদের করব। আমার মনে হয় তাদের অজ্ঞতার কারণে বাচ্চাটির মৃত্যু হয়েছে।
মন্তব্য করুন