- সারাদেশ
- বাউফলে এবার এমপিপুত্রের বক্তব্য নিয়ে তোলপাড়
বাউফলে এবার এমপিপুত্রের বক্তব্য নিয়ে তোলপাড়

উঠান বৈঠকে বক্তব্য দেন এমপিপুত্র রায়হান শাকিব
স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বাউফলের সংসদ সদস্য ও সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজের ছেলে রায়হান শাকিবের বক্তব্য নিয়ে এবার তোলপাড় শুরু হয়েছে। এর আগে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জোবায়েদুল হক রাসেল ও বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি তালুকদার মো. জাহাঙ্গীরের বক্তব্য নিয়ে তোলপাড় হয়। উপজেলার নাজিরপুর-তাঁতেরকাঠি ইউপির উপনির্বাচনে নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী ইব্রাহীম ফারুকের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে বিতর্কের জন্ম দেন তারা। ফলে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে তৈরি হয় শঙ্কা। এসবের জেরে উপনির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। সোমবার বিষয়টি জানান জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা খান আবি শাহানুর খান।
জানা যায়, গত রোববার বড় ডালিমা এলাকায় নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী ফারুকের পক্ষে উঠান বৈঠকে বক্তব্য দেন এমপিপুত্র রায়হান শাকিব। এ সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তোমরা বাড়ি বাড়ি গিয়া মা-চাচিদের নিয়া আসবা, নৌকায় ভোটটা দিয়া আসবা। নেওয়া-আনার খরচ নৌকা(র)। ভোট যেন কোনোটা মিস না হয়। এইটা মনে রাখবেন। আমার ইজ্জত আপনাদের ইজ্জত, আপনাদের ইজ্জত নেতার ইজ্জত।’
এই ব্যাপারে এমপিপুত্র রায়হান শাকিব বলেন, ‘আমি এভাবে বলিনি। আমি বলেছি আমাদের নৌকার যেসব কর্মী-সমর্থক অসুস্থ ও হাঁটতে পারেন না কিংবা বয়স্ক তাদেরকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে আমাদের এসব অসহায় কর্মী-সমর্থকদের যাতায়াতের খরচও আমরা যারা নৌকার নেতৃবৃন্দ আছি তারা দিবো। সব নির্বাচনেই দলের কর্মী-সমর্থকদের যাতায়াতের একটা খরচ দেওয়া হয়। এটাকে ভিডিও করে কেউ সুবিধা নিলে, কেউ ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করলে সেটা দুঃখজনক। আমরা রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। আমার বাবা সাত সাত বার এমপি হয়েছেন। আমরা বিভিন্ন সময় বক্তব্য দেই। হয়তো কথা বলতে গিয়ে একটু ঊনিশ-বিশ হতেই পারে। তা ভিডিও করে ভাইরাল করা সত্যি সত্যিই দুঃখজনক।’
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা খান আবি শাহানুর খান জানান, ভাইরাল হওয়া বক্তব্যগুলোর বিষয়ে তাঁরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন। এ ছাড়া সুষ্ঠু ভোট গ্রহণে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে ৭ ফেব্রুয়ারি নাজিরপুর-তাঁতেরকাঠি ইউনিয়নের নির্বাচন হয়। আওয়ামী লীগের প্রার্থী আমির হোসেন ব্যাপারী নির্বাচিত হন। কিন্তু তিনি শপথ নেওয়ার আগেই ১৯ ফেব্রুয়ারি মারা যান। এ ছাড়া ওই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের এক সদস্যও মারা যান। এ কারণে উপনির্বাচন হচ্ছে। চেয়ারম্যান পদে ৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ভোট স্থগিতের বিষয়ে ইসির প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আচরণ বিধিমালা লঙ্ঘন নিয়ে নৌকার প্রার্থী ইব্রাহিম ফারুকের বিষয়ে অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী এস এম মহসীন একাধিকবার রিটার্নিং অফিসারের কাছে অভিযোগ দেন। ওই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বাউফল থানার ওসিকে চিঠি দেন। তবে ওসি কোনো প্রতিবেদন দেননি। এ ছাড়া নৌকার প্রার্থীর এক সমর্থক জোবায়দুল হক ওরফে রাসেল গত শনিবার এক উঠান বৈঠকে ‘ভোট হবে ইভিএমে, কে কোথায় ভোট দেবে তা কিন্তু আমাদের কাছে চলে আসবে’- এমন বিতর্কিত বক্তব্য দেন। এই বক্তব্য ভাইরাল ও গণমাধ্যমে প্রকাশ-প্রচার হয়। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের নজরে এসেছে। এ প্রেক্ষাপটে নির্বাচন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
এ ছাড়া ওই বিষয়টি বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন