ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের একটি মাদ্রাসার বাথরুম থেকে মোহাম্মদ আলী (১০) নামে এক ছাত্রের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার বিকেলে শহরের কাউতলীর ইব্রাহিমিয়া তাহফিজুল কোরআন মাদ্রাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

মোহাম্মদ আলী কাউতলী এলাকার কাউছার মিয়ার ছেলে। সকালে পড়া না পারায় হেফজ বিভাগের শিক্ষক হুসাইন আহমেদ তাকে বেত্রাঘাত করেছিলেন বলে অন্য শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে।

পরে শিক্ষক হুসাইনকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অভিভাবকরা এসে সন্তানদের মাদ্রাসা থেকে নিয়ে যান।

ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে কাউছার মিয়া বলেন, প্রত্যেক দিন দুপুরে খাবার খেতে মোহাম্মদ আলী বাড়ি আসে। রোববার না আসায় মাদ্রাসায় খাবার দিতে গেলে শিক্ষকরা অস্থিরতা দেখান। দীর্ঘক্ষণ অফিসে বসিয়ে রাখেন। অধৈর্য হয়ে রাগারাগি শুরু করলে তাঁরা বাথরুমের সামনে নিয়ে গিয়ে বলেন- আপনার ছেলে এখানে আছে। পরে বাথরুমের ভেন্টিলেটরে গলায় গামছা পেঁচানো ছেলেকে পাই। তার পা ফ্লোরে লাগানো ছিল।

শিক্ষক হুসাইন আহমেদ বলেন, ‘ক্লাসে পড়া না পারায় সকালে আমি মোহাম্মদ আলীকে বেত্রাঘাত করি। পরে বিষয়টি বুঝিয়ে বলি এবং তার বাবাকেও অবহিত করি। দুপুরে বাথরুমে তার লাশ পেয়ে হতভম্ব হয়ে যাই। আমি হত্যা করে থাকলে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ধরা পড়বে।’

আরেক মাদ্রাসাশিক্ষক মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘এখানে ৭০-৭৫ শিক্ষার্থীকে প্রতিদিন ভোর থেকে ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া হয়। রোববার বাদ জোহর সামাইন নামে এক শিক্ষার্থী এসে মোহাম্মদ আলীর ফাঁস নেওয়ার কথা জানায়। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।’

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সদর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। আটক মাদ্রাসাশিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

খবর পেয়ে রোববার বিকেলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।