গাজীপুরে ইউপি সদস্য কর্তৃক ৮ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে নির্মমভাবে পিটিয়ে এক তরুণের সঙ্গে জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়া হয়েছে। একইসময়ে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় এক ইউপি সদস্য কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হন ভিজিএফ কার্ড প্রার্থী নারী। পৃথক দুই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে জড়িত ইউপি সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ তদন্ত সাপেক্ষে তাদের ও তাদের সহযোগীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জন্য দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।

আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন। 

বিবৃতিতে বলা হয়, গত রোববার কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের শিমুলিয়া গ্রামে স্থানীয় এক ইউপি সদস্য কর্তৃক বর্মণ সম্প্রদায়ের এক শিক্ষার্থীকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে এক তরুণের সঙ্গে বিয়ে দেয়া হয়। জানা যায়, গত ২৬ মে ওই শিক্ষার্থীর বাড়িতে একই এলাকার হবুরচালা গ্রামের তরুণ চন্দ্র বর্মণ বেড়াতে যান। ওই সময় বর্মণসহ শিক্ষার্থী তাঁর দাদির সঙ্গে ঘরে বসে গল্প করছিলেন। এ সময় স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম তার সহযোগীদের নিয়ে ওই শিক্ষার্থীর বাড়িতে যান। ওই শিক্ষার্থী চন্দ্র বর্মণ নামের তরুণের সঙ্গে খারাপ কাজ করেছেন অপবাদ দিয়ে ইউপি সদস্য ও কয়েকজন গ্রাম্য মাতব্বর মেয়েটির চুলের মুঠি ধরে চড়-থাপ্পড় ও দিয়ে লাঠি দিয়ে একের পর আঘাত করেন। এতে মেয়েটি খাট থেকে পড়ে গেলে সেখান থেকে চুল ধরে টেনে তুলে আবার মারধর করেন। তাঁদের মারধর করে বিয়ে দেন ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম।

এদিকে, গত ১২ আগস্ট (শুক্রবার) মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়ায় ভিজিএফ কার্ড প্রার্থী গৃহবধূকে ইউপি সদস্য কর্তৃক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। জানা যায়, ইউপি সদস্যের কাছে ১০ টাকা কেজিতে চাল পাওয়ার জন্য ভিজিএফ কার্ড চেয়েছিলেন দরিদ্র এক গৃহবধূ। 'দিই, দিচ্ছি' বলে কালক্ষেপণ করেন ওই জনপ্রতিনিধি। অবশেষে কুমতলব নিয়ে মঙ্গলবার রাতে কার্ড দেওয়ার নাম করে গৃহবধূর বাড়িতে হাজির হন, সেখানে তিনি ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন। ভুক্তভোগীর চিৎকারে প্রতিবেশীরা আটক করে ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসাইনকে।

এই দুই ঘটনায় শিক্ষার্থী ও গৃহবধূর সুচিকিৎসাসহ তাদের ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের অনুরোধও জানিয়েছে মহিলা পরিষদ। সেইসাথে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দায়বদ্ধতা নিশ্চিতকরণ এবং এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর কাছে অনুরাধ জানান নেতৃবৃন্দ।