- সারাদেশ
- সিন্ডিকেট করে নিলামের সার ক্রয়, আ'লীগ নেতার প্রক্সি দিয়েছেন ১০৭ জন
সিন্ডিকেট করে নিলামের সার ক্রয়, আ'লীগ নেতার প্রক্সি দিয়েছেন ১০৭ জন

ফাইল ছবি
দুপুরে সার নিলাম হওয়ার আগে সকালে গোপন বৈঠক। বৈঠকে ঠিক হয়- কে নিলাম ডাকে অংশ নেবেন এবং কত টাকা ডাকবেন। নিলাম শুরু হলে ১০৮ জন শিডিউল বাবদ টাকা জমা দিয়ে ডাকে অংশ নেন তিন থেকে চারজন।
সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ১২ হাজার বস্তা সার নিলামে দেওয়া হয় বগুড়া সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বগুড়া চেম্বারের সহসভাপতি মাহফুজুল ইসলাম রাজকে।
মঙ্গলবার বগুড়া সদর উপজেলা পরিষদের হলরুমে সারের এ নিলাম ডাক হয়। পরে জানা যায়, একজন ছাড়া বাকি ১০৭ জনই প্রক্সি দিতে শিডিউল বাবদ টাকা জমা দিয়েছিলেন।
গত ৭ আগস্ট সদরের এরুলিয়া বাজারের একটি গুদাম থেকে অবৈধভাবে মজুত ১২ হাজার বস্তা সার জব্দ করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সমর কুমার পালের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত। ওই সার আজ নিলামে বিক্রির জন্য সিদ্ধান্ত হয়। এ নিয়ে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহফুজ আলমকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের কমিটি করে দেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক দুলাল হোসেন।
অভিযোগ রয়েছে, ডাক শুরুর আগে সকাল ১০টা থেকে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু সুফিয়ান শফিকের অফিসে গোপন বৈঠক হয়। বৈঠকে বগুড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও গাবতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফি নেওয়াজ খান, বগুড়া সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাজসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়- কে কে নিলাম ডাকে প্রক্সি হিসেবে অংশ নেবেন এবং কত টাকা ডাকবেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী নিলাম ডাকে অংশ নিতে ১০৮ জন শিডিউল বাবদ জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা করে ৫৪ লাখ টাকা জামানত জমা দেন। দুপুর সোয়া ১টায় ডাক শুরু হলে দেখা যায় তিন থেকে চারজন অংশ নিয়েছেন। পরে সর্বোচ্চ দরে রাজকে ওই সারগুলো নিলামে দেওয়া হয়।
শর্তানুযায়ী, আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে গুদাম থেকে সার নিয়ে দুই মাসের মধ্যে সরাসরি কৃষকের কাছে সরকারি মূল্যে বিক্রি করতে হবে।
এ বিষয়ে মাহফুজুল ইসলাম রাজ বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সারের দাম বাড়িয়ে কৃষকদের ঠকাচ্ছেন। এ সার যাতে কৃষকরা ন্যায্যমূল্যে পান, সে জন্য সরকারি দরে কিনেছি।
তিনি বলেন, সার সরাসরি কৃষকদের মাঝে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করবেন। কোনো সিন্ডিকেট হয়নি বলে জানান তিনি। রাজ বলেন, যারা অবৈধভাবে সারের মজুত করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে বলা হয়েছে।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহফুজ আলম বলেন, ১০৮ জন শিডিউল বাবদ টাকা জমা দিয়ে ডাকের সময় হাতেগোনা তিন থেকে চারজনের অংশ নেওয়ার বিষয়টি বোধগম্য হয়নি। নিলামের শর্তানুযায়ী সর্বোচ্চ দরতাদাকে সার দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন