- সারাদেশ
- রাবেয়া স্কুলে যায়, রোকাইয়ার সময় কাটে হুইলচেয়ারে
রাবেয়া স্কুলে যায়, রোকাইয়ার সময় কাটে হুইলচেয়ারে

পাবনার চাটমোহরে বাবা-মায়ের সঙ্গে শিশু রাবেয়া ও রোকাইয়া - সমকাল
সহপাঠীদের সঙ্গে গান, খেলাধুলা, পড়াশোনায় বেশ প্রাণবন্ত রাবেয়া। নিয়মিত স্কুলে যায়। তাকে পেয়ে খুশি শিক্ষকরাও। তবে যমজ বোন রোকাইয়া চলাফেরা করতে পারে না। তার বেশিরভাগ সময় কাটে হুইলচেয়ারে। পাবনার চাটমোহরের সেই জোড়া মাথার যমজ রাবেয়া-রোকাইয়া। তাদের বয়স ছয় বছর পূর্ণ হয়েছে গত জুনে। দেশ-বিদেশে আলোচিত অস্ত্রোপচারে মাথা আলাদা করার পর ২০২১ সালের ১৫ মার্চ বাড়ি ফিরেছিল দুই বোন। সেদিন তাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন প্রতিবেশী ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
হাসিখুশি রাবেয়া জানায়, স্কুলে যেতে তার ভালো লাগে। স্যার ও ম্যাডাম তাকে খুব ভালোবাসেন। বন্ধুদের সঙ্গে গান গেয়ে, ছবি এঁকে আনন্দে সময় কাটে। স্কুলের শিক্ষক আমেনা খাতুন ও সাবিনা খাতুন বলেন, রাবেয়ার মেধা তীক্ষষ্ট। পড়াশোনা, আচরণে সে খুব ভালো।
আটলংকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণির ছাত্রী রাবেয়ার মাথায় খুলি নেই। তার মাথা চামড়া দিয়ে ঢাকা। ছোট কোনো আঘাতেই অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে। অস্ত্রোপচারের পর রাবেয়ার মাথার খুলি না থাকায় কৃত্রিম খুলি সংযোজন করা হয়। কিছুদিন পর সংক্রমণ দেখা দেওয়ায় চিকিৎসকরা সেটা খুলে দেন। এরপর ধীরে ধীরে চামড়া দিয়ে খুলিবিহীন অংশটা ঢেকে যায়। এখনও এভাবেই আছে। তবে আশার কথা হলো মাথায় চারপাশ দিয়ে খুলির হাড় ধীরে ধীরে বাড়ছে। সে কারণে চিকিৎসকরা অপেক্ষা করছেন। এ নিয়ে আরও গবেষণা করে চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত নেবেন। এদিকে রোকাইয়া কথা বলতে পারে না। নিজের হাতে খাওয়া, গোসল কোনোটাই করতে পারে না। তার নানা ধরনের ফিজিওথেরাপি করাতে হয়। তাকে নিয়ে অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকতে হয় বাবা-মাকে।
২০১৬ সালের জুন মাসে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জন্ম নেয় রাবেয়া-রোকাইয়া। ২০১৭ সালের ৫ জুলাই 'জোড়া মাথার শিশু নিয়ে দুশ্চিন্তায় শিক্ষক দম্পতি' শিরোনামে সমকালে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এছাড়া প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিভিন্ন গণমাধ্যম। বিষয়টি নজরে এলে তাদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর নির্দেশে ঢাকার সিএমএইচে ভর্তি করা হয় দুই বোনকে। দেশি-বিদেশি শতাধিক চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চলে তাদের চিকিৎসা ও জটিল অস্ত্রোপচার।
রাবেয়া-রোকাইয়ার বাবা অমৃতকুন্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, রাবেয়া পুরোপুরি সুস্থ বলা চলে। সে স্কুলে যাচ্ছে, সবার সঙ্গে খেলাধুলা করছে। কখনও চিন্তা করেননি যমজ শিশু আলাদা হবে, স্বাভাবিক জীবনযাপন করবে। প্রধানমন্ত্রীর ভালোবাসায় দুই শিশু নতুন জীবন পেয়েছে। তাদের মা আটলংকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক তাসলিমা খাতুন বলেন, রোকাইয়াকে নিয়ে খুব কষ্টে আছি। খাবার খেতে গেলে গলায় আটকে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। মনে হয় এই বুঝি আমার মেয়ে চলে গেলো। এছাড়া রাবেয়াকে নিয়ে স্কুলে যাতায়াতেও ভয়ে থাকতে হয়। কারণ ওর মাথার খুলি নেই। হঠাৎ পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পেলে ওকে বাঁচানো যাবে না। রফিকুল ইসলাম ও তাসলিমা খাতুন বলেন, তাঁরা দু'জন দুই স্কুলে শিক্ষকতা করায় সন্তানদের দেখাশোনা বা যত্ন নেওয়ায় সমস্যায় পড়তে হয়। তাঁদের শহরের কাছাকাছি একই স্কুলে বদলি করা হলে ভালো হতো। স্কুলের পাশে বাসা ভাড়া নিয়ে দুই মেয়েকে ভালোভাবে যত্ন নেওয়া যেত। এদিকে, অর্থাভাবে রোকাইয়াকে ঠিকমতো থেরাপি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। দু'জনের চিকিৎসা বেশ ব্যয়বহুল।
চাটমোহরের ইউএনও মমতাজ মহল বলেন, তাঁরা সবসময় পরিবারটির খোঁজখবর রাখেন। রাবেয়া-রোকাইয়ার বাবা ও মাকে একই স্কুলে বদলির বিষয়টি ভেবে দেখা হচ্ছে। শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে শহরের কাছাকাছি স্কুলে বদলির চেষ্টা করা হবে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খন্দকার মনছুর রহমান বলেন, দু'জনকে একই স্কুলে বদলির আবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। যেখানে তাঁরা যেতে চান সেখানে পদ আপাতত শূন্য নেই। এছাড়া বর্তমানে বদলি কার্যক্রম বন্ধ আছে। এ কার্যক্রম শুরু হলে পদ শূন্য থাকা সাপেক্ষে তাঁদের একই স্কুলে নেওয়ার ব্যবস্থা হবে।
হাসিখুশি রাবেয়া জানায়, স্কুলে যেতে তার ভালো লাগে। স্যার ও ম্যাডাম তাকে খুব ভালোবাসেন। বন্ধুদের সঙ্গে গান গেয়ে, ছবি এঁকে আনন্দে সময় কাটে। স্কুলের শিক্ষক আমেনা খাতুন ও সাবিনা খাতুন বলেন, রাবেয়ার মেধা তীক্ষষ্ট। পড়াশোনা, আচরণে সে খুব ভালো।
আটলংকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণির ছাত্রী রাবেয়ার মাথায় খুলি নেই। তার মাথা চামড়া দিয়ে ঢাকা। ছোট কোনো আঘাতেই অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে। অস্ত্রোপচারের পর রাবেয়ার মাথার খুলি না থাকায় কৃত্রিম খুলি সংযোজন করা হয়। কিছুদিন পর সংক্রমণ দেখা দেওয়ায় চিকিৎসকরা সেটা খুলে দেন। এরপর ধীরে ধীরে চামড়া দিয়ে খুলিবিহীন অংশটা ঢেকে যায়। এখনও এভাবেই আছে। তবে আশার কথা হলো মাথায় চারপাশ দিয়ে খুলির হাড় ধীরে ধীরে বাড়ছে। সে কারণে চিকিৎসকরা অপেক্ষা করছেন। এ নিয়ে আরও গবেষণা করে চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত নেবেন। এদিকে রোকাইয়া কথা বলতে পারে না। নিজের হাতে খাওয়া, গোসল কোনোটাই করতে পারে না। তার নানা ধরনের ফিজিওথেরাপি করাতে হয়। তাকে নিয়ে অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকতে হয় বাবা-মাকে।
২০১৬ সালের জুন মাসে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জন্ম নেয় রাবেয়া-রোকাইয়া। ২০১৭ সালের ৫ জুলাই 'জোড়া মাথার শিশু নিয়ে দুশ্চিন্তায় শিক্ষক দম্পতি' শিরোনামে সমকালে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এছাড়া প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিভিন্ন গণমাধ্যম। বিষয়টি নজরে এলে তাদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর নির্দেশে ঢাকার সিএমএইচে ভর্তি করা হয় দুই বোনকে। দেশি-বিদেশি শতাধিক চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চলে তাদের চিকিৎসা ও জটিল অস্ত্রোপচার।
রাবেয়া-রোকাইয়ার বাবা অমৃতকুন্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, রাবেয়া পুরোপুরি সুস্থ বলা চলে। সে স্কুলে যাচ্ছে, সবার সঙ্গে খেলাধুলা করছে। কখনও চিন্তা করেননি যমজ শিশু আলাদা হবে, স্বাভাবিক জীবনযাপন করবে। প্রধানমন্ত্রীর ভালোবাসায় দুই শিশু নতুন জীবন পেয়েছে। তাদের মা আটলংকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক তাসলিমা খাতুন বলেন, রোকাইয়াকে নিয়ে খুব কষ্টে আছি। খাবার খেতে গেলে গলায় আটকে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। মনে হয় এই বুঝি আমার মেয়ে চলে গেলো। এছাড়া রাবেয়াকে নিয়ে স্কুলে যাতায়াতেও ভয়ে থাকতে হয়। কারণ ওর মাথার খুলি নেই। হঠাৎ পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পেলে ওকে বাঁচানো যাবে না। রফিকুল ইসলাম ও তাসলিমা খাতুন বলেন, তাঁরা দু'জন দুই স্কুলে শিক্ষকতা করায় সন্তানদের দেখাশোনা বা যত্ন নেওয়ায় সমস্যায় পড়তে হয়। তাঁদের শহরের কাছাকাছি একই স্কুলে বদলি করা হলে ভালো হতো। স্কুলের পাশে বাসা ভাড়া নিয়ে দুই মেয়েকে ভালোভাবে যত্ন নেওয়া যেত। এদিকে, অর্থাভাবে রোকাইয়াকে ঠিকমতো থেরাপি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। দু'জনের চিকিৎসা বেশ ব্যয়বহুল।
চাটমোহরের ইউএনও মমতাজ মহল বলেন, তাঁরা সবসময় পরিবারটির খোঁজখবর রাখেন। রাবেয়া-রোকাইয়ার বাবা ও মাকে একই স্কুলে বদলির বিষয়টি ভেবে দেখা হচ্ছে। শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে শহরের কাছাকাছি স্কুলে বদলির চেষ্টা করা হবে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খন্দকার মনছুর রহমান বলেন, দু'জনকে একই স্কুলে বদলির আবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। যেখানে তাঁরা যেতে চান সেখানে পদ আপাতত শূন্য নেই। এছাড়া বর্তমানে বদলি কার্যক্রম বন্ধ আছে। এ কার্যক্রম শুরু হলে পদ শূন্য থাকা সাপেক্ষে তাঁদের একই স্কুলে নেওয়ার ব্যবস্থা হবে।
মন্তব্য করুন