- সারাদেশ
- ট্রেনের ধাক্কায় মেয়ের হাত ও মায়ের পা বিচ্ছিন্ন
ট্রেনের ধাক্কায় মেয়ের হাত ও মায়ের পা বিচ্ছিন্ন

ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত মা-মেয়ে
কুষ্টিয়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে পাঁচ বছরের শিশু কন্যার হাত ও মায়ের পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। শনিবার সকাল ৮টার দিকে কুষ্টিয়া পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের হরিশংকরপুর ধোপাপাড়া এলাকায় চলন্ত ট্রেনের ধাক্কায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। তবে আহতদের স্বজনদের দাবি, পারিবারিক কলহের জেরে শিশু সন্তানকে নিয়ে ওই মা ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
আহতরা হলেন- সুমি খাতুন (৩০) ও তার পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে সুরভি। দুর্ঘটনায় সুমির বাম হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। অন্যদিকে সুরভির মা সুমির ডান পা গুরুতর জখম হয়েছে। একই সাথে তার হাতের আঙ্গুলও থেঁতলে গেছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় মা ও মেয়েকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
সুমি খাতুন কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এস্টেট এলাকায় সি ব্লকের সাপ্পী ইসলামের স্ত্রী। তাদের আরো এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও রেলওয়ে পুলিশ জানায়, সকালের দিকে রাজবাড়ী থেকে মালবাহী একটি ট্রেন কুষ্টিয়ার দিকে আসছিল। সন্তানকে কোলে নিয়ে রেল লাইনের পাশ দিয়ে হাঁটছিলেন সুমি। এ সময় ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেওয়ার চেষ্টা করলেও সুমি ও তার মেয়ে লাইনের ওপর পড়ে যায়। এতে শিশু সুরভির বাম হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কেটে রেল লাইনের ওপর পড়ে যায় ও সারা শরীরে আঘাত লাগে এবং সুমির ডান পা রেলের নিচে পড়ে কেটে ঝুলতে থাকে। এছাড়া তার দুই হাতের আঙ্গুল থেঁতলে যায়। এলাকার লোকজন টের পেয়ে দ্রুত এসে তাদেরকে উদ্ধার করে ভ্যানে করে হাসপাতালে পাঠায়।
আহতদের স্বজনরা বলেন,প্রায় ১২ বছর আগে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার দহকুলা গ্রামের সুমির সাথে সাপ্পীর বিয়ে হয়। স্বামীর সাথে সুমির মাঝেমধ্যেই ঝগড়া হতো। শনিবার সকালে পারিবারিক কলহের জেরে সুমি তার ৫ বছর বয়সী মেয়ে সুরভিকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা চেষ্টা করেন।
দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আকবার বলেন, হরিশংকরপুর ধোপাপাড়া এলাকায় মালবাহী ট্রেনের চাপায় শিশুর হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তাছাড়া মায়ের পা কেটে যাওয়া ছাড়াও মেয়ের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর জখম হয়েছেন। আমরা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। তাদের অবস্থা গুরুতর।
সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শিশুটির বিচ্ছিন্ন হওয়া বাম হাতের ক্ষত স্থানে ব্যান্ডেজ করা হয়েছে। শিশুটি ও তার মায়ের হাত, পা, মাথা সহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যান্ডেজ করা হয়েছে। তারা যন্ত্রণায় চিৎকার করছিল। খবর পেয়ে তাদের স্বজনরা হাসপাতালে ছুটে আসেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পোড়াদহ রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনজের আলী বলেন, সকাল ৮টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের হরিশংকরপুর এলাকায় ফরিদপুর থেকে ছেড়ে আসা দর্শনাগামী মালবাহী ট্রেনে দুর্ঘটনাটি ঘটে। ঘটনাস্থলে অফিসার ফোর্স পাঠানো হয়েছে। দুইজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঠিক কি কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে এখনো জানা যায়নি। একটি শিশুর কাটা হাত রেল লাইনের ওপর পড়ে ছিল বলেও জানান তিনি।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আশরাফুল আলম বলেন, আশঙ্কাজনক অবস্থায় মা ও মেয়েকে শনিবার সকাল ৯টার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত শিশু বাম হাত কনুইয়ের নিচের অংশ শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। প্রয়োজনীয় সকল চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে তাদের।
মন্তব্য করুন