ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুই পাশে পাইকারি সবজির বারৈচা বাজার। এর কাছেই মহাসড়কে ময়লার স্তূপ। আর্বজনার উৎকট গন্ধে অতিষ্ঠ সড়কে যাতায়াতকারীরা। যেখানে ময়লা ফেলা হচ্ছে, তার পাশেই সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাইনবোর্ড। এতে লেখা- 'ময়লা ফেলা নিষেধ, যা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ, ময়লা পরিবেশ দূষণ করে'। সাইনবোর্ড টানিয়েই যেন দায় শেষ। নেই কোনো তদারকি। এই ময়লার স্তূপ বেলাব উপজেলার বারৈচা বাসস্ট্যান্ডের কাছে মহাসড়কের পাশে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচল করে থাকে। বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বারৈচা, শিবপুর ও নারায়ণপুর বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা ও পথচারী আসা-যাওয়া করেন। কিন্তু বারৈচা বাজারের কাছে এলেই দুর্গন্ধের সম্মুখীন হতে হয় তাদের। কারণ ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন বারৈচাবাজার পরিষ্কার করে ময়লা-আবর্জনা সড়কের পাশে ফেলেন। এসব পচে সৃষ্টি হয় দুর্গন্ধ।

গত সোমবার সকালে সরেজমিন দেখা গেছে, বারৈচাবাজারের একটু সামনেই মহাসড়কের পাশে ময়লার স্তূপ। সড়কঘেঁষে অন্তত আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল, পলিথিন, বস্তা, হাসপাতালের বর্জ্য, কার্টুন, পচে যাওয়া সবজি, উচ্ছিষ্ট খাবার, কর্কশিট, কাগজ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে স্তূপাকারে পড়ে রয়েছে।

এসব আর্বজনা থেকে বৃষ্টির সময় নোংরা পানি গড়িয়ে পড়ছে পাশের জলাশয় ও বিভিন্ন ফসলি জমিতে। বেলা ১১টার দিকে মহাসড়কের পাশ দিয়ে নাক চেপে যাচ্ছিলেন স্কুলছাত্রী লিজা আক্তার। তার ভাষ্য, প্রতিদিনই দুর্গন্ধ সহ্য করে এই সড়ক দিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করতে হয় তাকে। সহপাঠীদের অনেকেই নাক চেপে ধরে এই সড়ক দিয়ে স্কুলে যায়। মহাসড়ক থেকে দ্রুত ময়লা অপসারণের দাবি তার।

মোবারক হোসেন নামে এক পথচারী বলেন, একটি জনবহুল বাজার ও মহাসড়কের পাশে আবর্জনা ফেলে পরিবেশ নোংরা করে রাখা হয়েছে। এটা কোনোভাবেই সহ্য করার মতো নয়। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষকে যাতায়াত করতে হয়। একটু বৃষ্টি হলেই এসব বর্জ্য সড়কে ছড়িয়ে পড়ে। এসব আবর্জনা থেকে শুধু দুর্গন্ধই ছড়াচ্ছে না, মশা-মাছি জন্ম নিচ্ছে।

চরউজিলাব ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও বারৈচা বাজার কমিটির সভাপতি সৈয়দ শফিকুল ইসলাম সম্রাট জানান, মহাসড়কের পাশে ময়লা ফেলার ব্যাপারে বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি। তারা যেন এখানে ময়লা ফেলে পরিবেশ নষ্ট না করে, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বেলাব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আক্তার হোসেন শাহিন বলেন, যে স্থানে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে, সেই জায়গাটা সম্ভবত সড়ক ও জনপথ বিভাগের। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে খুব শিগগির চার লেনের কাজ শুরু হবে, তখন হয়তো এরকমটা আর থাকবে না।


সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রাশেদুল হক জানান, মহাসড়কের পাশে ময়লা ফেলা অপরাধ। এ ব্যাপারে ওই এলাকার জনগণকে সচেতন করা হয়েছে। যেখানে ময়লা ফেলা হচ্ছে, সেখানে একটি সাইনবোর্ড রয়েছে।