- সারাদেশ
- এবার মোংলা বন্দরে ড্রেজিং প্রকল্পে বাধা দেওয়ার অভিযোগ
এবার মোংলা বন্দরে ড্রেজিং প্রকল্পে বাধা দেওয়ার অভিযোগ

মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের ইনার বার ড্রেজিং প্রকল্পের বালু ফেলার স্থান নিয়ে আন্দোলনের মধ্যে এবার প্রকল্প কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।
বুধবার খুলনা প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা এ অভিযোগ করেন।
সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০২০ সালের ২৮ জানুয়ারি মোংলা বন্দর চ্যানেলের ইনার বারে হাড়বাড়িয়া থেকে জেটি পর্যন্ত ড্রেজিং প্রকল্প একনেকে অনুমোদন পায়। এই প্রকল্প শেষ হলে বন্দরের জেটিতে সাড়ে ৯ থেকে ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ সরাসরি ভিড়তে পারবে।
তিনি আরও বলেন, ড্রেজিং প্রকল্পের বালু ফেলার জন্য দাকোপ উপজেলার বানিশান্তা ইউনিয়নের ৩০০ একর জমি অধিগ্রহণে যথাযথ কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দিয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিসহ গঠিত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রস্তাবিত ওই জমির মধ্যে ১১৪ দশমিক ৫৩ একর জমি এক ফসলি এবং ১৮৫ দশমিক ৪৭ একর জমি দুই ফসলি। ওই এলাকায় কোনো জলাশয়, মৎস্য ঘের ও বসতবাড়ি নেই। গবাদি পশুর চারণভূমিও নয়। তবে একটি মহল ওই জমি তিন ফসলি দাবি করে বালু ফেলতে দেবে না বলে হুমকি দিয়েছে।
তিনি দাবি করেন, এই প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেলে মোংলা বন্দর অচল হয়ে যাবে। এ ছাড়া বন্দরকেন্দ্রিক ইপিজেড, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, খানজাহান আলী বিমানবন্দর, খুলনা-মোংলা রেললাইন প্রকল্প ও মোংলা ইকোনমিক জোনের কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা তৈরি হবে।
এদিকে, বালু ফেলার জন্য নির্ধারিত বানিশান্তা ইউনিয়নের ৩০০ একর জমি তিন ফসলি দাবি করে তা রক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন স্থানীয়রা। তাঁদের সঙ্গে বিভিন্ন সংগঠনও সংহতি জানিয়েছে। তাঁদের দাবি, ফসলি জমি বাদ দিয়ে অন্য স্থানে বালু ফেলা হোক। তবে এবার তাঁদের বিরুদ্ধে ড্রেজিং প্রকল্পে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুললেন বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।
উদ্বেগ কৃষক সমিতির: খুলনার দাকোপের বানিশান্তা ইউনিয়নের ৩০০ একর তিন ফসলি জমিতে ড্রেজিংয়ের বালু ফেলার সিদ্ধান্তে উদ্বেগ জানিয়েছে জাতীয় কৃষক সমিতি। অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
সমিতির সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক ও সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম গোলাপ এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানান।
তাঁরা বলেন, সম্প্রতি মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ পশুর নদ ড্রেজিং করতে 'মোংলা বন্দর ইনারবার ড্রেজিং' প্রকল্পের জন্য পশুর নদে ড্রেজিং করা মাটি ফেলতে এক হাজার একর জমি হুকুম দখলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার মধ্যে বানিশান্তার ওই ৩০০ একর তিন ফসলি ও উর্বর কৃষিজমিও রয়েছে। যার ওপর পাঁচটি গ্রামের সহস্রাধিক পরিবারের জীবন-জীবিকা সম্পূর্ণরূপে নিভর্রশীল। আর এই জমিতে ড্রেজিংয়ের মাটি ফেললে স্থানান্তরিত হতে বাধ্য হবে হাজারেরও বেশি সংখ্যালঘু সনাতন ধর্মাবলম্বী পরিবার।
বিবৃতিতে বলা হয়, জনগণকে ভয় দেখিয়ে নয়, তাদের যৌক্তিক দাবিকে মেনে নিয়েই ড্রেজিংয়ের মাটি ফেলার সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। এলাকার জনপ্রতিনিধি, জেলা প্রশাসক, আন্দোলনরত কিষান-কিষানি এবং নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ নিয়ে অকৃষি জমি রয়েছে- এমন বিকল্প স্থান ড্রেজিংয়ের মাটি ফেলার জন্য বেছে নিলেই এই সংকটের সমাধান হবে।
মন্তব্য করুন