আর্থিক জটিলতায় খাদ্য ও ওষুধের ভয়াবহ সংকটে পড়েছে দেশের একমাত্র বিশেষায়িত পাবনা মানসিক হাসপাতাল। এ কারণে গত রোববার হাসপাতালে বিনামূল্যের ৪৮০ বেডে নতুন রোগী ভর্তি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এক দিন পরই সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে। সোমবার থেকেই নতুন রোগী ভর্তি শুরু হয়েছে।

হাসপাতাল থেকে জানা যায়, ৫০০ শয্যার প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে ৪৯০ রোগী ভর্তি রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৪০ জনের মতো পেয়িং বেডে, বাকিরা বিনামূল্যের বেডের। পেয়িং বেডে রোগীর থাকা-খাওয়ার খরচ হিসাবে প্রতি মাসে আট হাজার ৫৫২ টাকা নেয় হাসপাতালটি। বিনামূল্যের বেডের রোগীদের খরচ বহন করা হয় সরকারি তহবিল থেকে।

গত রোববার হাসপাতালের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. রতন কুমার রায় স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়েছিল, হাসপাতালের টেন্ডার কার্যক্রমের ওপর আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার কারণে রোগীদের খাবার, ওষুধসহ পণ্য সরবরাহের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। বিষয়টি একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এতে রোগীদের খাবার ও ওষুধের চরম সংকটে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এ কারণে হাসপাতালে বিনামূল্যের বেডে নতুন রোগী ভর্তি বন্ধ এবং আগের রোগীদের পর্যায়ক্রমে বাড়িতে পাঠানোর জন্য সংশ্নিষ্ট ওয়ার্ডের কনসালট্যান্ট ও ওয়ার্ড চিকিৎসদের নির্দেশ দেওয়া হলো।

অফিস আদেশটি দেওয়ার আগের দিনই অবশ্য হাসপাতালে রোগী ভর্তি বন্ধ হয়ে যায়। রোগী দেখাও বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন স্বজনরা। জামালপুর থেকে ছেলেকে নিয়ে আসা হাসনা খাতুন জানান, রোগী ভর্তি বন্ধ থাকায় তিন দিন ধরে একটি হোটেলে অবস্থান করছেন। এখন ছেলেকে নিয়ে কোথায় যাবেন, কী করবেন বুঝতে পারছেন না। অনেক অনুরোধের পরও চিকিৎসক রোগী দেখেননি, ভর্তিও করেননি।

হাসপাতালের পরিচালক রতন কুমার জানান, রোগীদের খাবারের জন্য প্রতি মাসে কমপক্ষে ২০ লাখ টাকা প্রয়োজন। তবে দরপত্র নিয়ে মামলা থাকায় গত প্রায় আড়াই মাস বাকিতে বিশেষ কমিটির মাধ্যমে খাবার সরবরাহ ঠিক রাখা হয়। জুলাইয়ে ওই নিষেধাজ্ঞার পর এখন সেপ্টেম্বর মাসের অর্ধেক। তাই কেউ আর বাকিতে পণ্য দিচ্ছেন না। এ কারণে রোগী ভর্তি বন্ধ এবং আগের রোগীদের বাড়িতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সোমবার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আশ্বাস দেওয়ায় ফের ভর্তি শুরু হয়েছে।