বেশি দামে গম আমদানির সিদ্ধান্তকে জনস্বার্থ পরিপন্থি উল্লেখ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) উদ্বেগের বিষয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয় বলছে, এটি সরকারকে বেকায়দায় ফেলার ষড়যন্ত্র। সঠিক তথ্য গোপন করে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে টিআইবি গণমাধ্যমে ওই বিবৃতি পাঠিয়েছে বলেও দাবি মন্ত্রণালয়ের।

খাদ্য মন্ত্রণালয় তাদের ব্যাখ্যায় বলছে, সম্প্রতি 'বেশি দামে গম আমদানি' শিরোনামে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নজরে এসেছে। এখানে ভুল ও অসঙ্গতিপূর্ণ তথ্য যুক্ত করা হয়েছে। গম ও চাল ক্রয়ে মন্ত্রণালয় গণখাতে ক্রয় আইনের কোনো লঙ্ঘন করেনি এবং কোনো তৃতীয় পক্ষকে ক্রয় প্রক্রিয়ায় যুক্ত করেনি। কয়েকটি গণমাধ্যমের সংবাদে যে তৃতীয় পক্ষের নাম বলা হচ্ছে, তাদেরকে রাশিয়া সরকারের পক্ষ থেকে লোকাল এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কোনো তৃতীয় পক্ষ বাংলাদেশের গম ক্রয়ের আলোচনা, মূল্য নির্ধারণ ও নীতি নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত ছিল না।

বেশি দামে গম কেনা হচ্ছে- তথ্যটি সঠিক নয়, উল্লেখ করে মন্ত্রণালয় আরও জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিনিয়ত গমের দাম ওঠানামা করে। যুদ্ধ শুরুর পর বিশ্ববাজার থেকে গম সংগ্রহ অনিশ্চয়তায় পড়ে। বাংলাদেশের গম আমদানির অন্যতম উৎস ভারত গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় গম আমদানি আরও অনিশ্চিত হয়ে যায়। অথচ সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রম চালানো, নিয়মিত অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা ও খাদ্য নিরাপত্তার জন্য গম সংগ্রহ অতীব জরুরি হয়ে পড়ে। গমের নিরাপদ মজুত যেখানে অন্তত দুই লাখ টন থাকার কথা, তখন তা এক পর্যায়ে ১ দশমিক ২৫ লাখ টনে নেমে আসে। বর্তমান মজুত ১ দশমিক ২২ লাখ টন। পার্শ্ববর্তী কোনো দেশ গম রপ্তানি করে না। অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা থেকে জিটুজি প্রক্রিয়ায় গম সংগ্রহের চেষ্টা করা হয়েছে। প্রতি ক্ষেত্রে গমের দাম ৫০০ ডলারের ওপরে হওয়ায় সরকার সেখান থেকে গম কেনায় আগ্রহী হয়নি।

তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে গম কেনা হয়নি উল্লেখ করে মন্ত্রণালয় বলেছে, প্রডিনটর্গ রাশিয়ার গম রপ্তানির জন্য রাশিয়া সরকার কর্তৃক মনোনীত প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ সরকার প্রডিনটর্গকে মনোনীত করেনি। ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে প্রতিষ্ঠানটি জিটুজি ভিত্তিতে বাংলাদেশে গম সরবরাহ করে আসছে।