বগুড়ার শিবগঞ্জে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় বখাটেরা রামদা দিয়ে এক দাখিল পরীক্ষার্থীর হাতের কবজি ও তার ভাইয়ের পা কেটে দিয়েছে। শুক্রবার রাতে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার নাটমরিচা গ্রামের ইদগাহ মাঠ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলো- দাখিল পরীক্ষার্থী নয়ন মিয়া (১৬) তার ভাই ফারুক হোসেন (২২)। তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জানা যায়, শিবগঞ্জ উপজেলার আটমূল ইউনিয়নের কাঠগাড়া গ্রামের আবুল কালামের ছেলে নয়ন মিয়া (১৬) কাঠগাড়া জোনামিয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে এবার দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেয়। বৃহস্পতিবার আলিয়ারহাট মাদ্রাসা পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার সময় দুপুর ২টার দিকে বেতগাড়ী গ্রামের একটি মুদির দোকানের সামনে বেশ কয়েক জন বখাটে যুবক নারী পরীক্ষার্থীদের উত্ত্যক্ত করতে থাকে। এ সময় নয়ন বখাটেদের নিষেধ করলে তারা নয়ন এর ওপর ক্ষিপ্ত হয় এবং নয়নকে বিভিন্ন হুমকি দেয়। এরই জেরে শুক্রবার সন্ধ্যায় ৫-৬ জন বখাটে নয়নকে খুঁজতে থাকে। তারা নয়নকে পুকুর বাজারে একা পেয়ে আবারও ভয়-ভীতি দেখায় ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। বিষয়টি নয়ন বাড়ি ফিরে তার বাবাকে জানায়। তার বাবা আবুল কালাম ও ভাই ফারুক হোসেন বিষয়টি নিরসেনর জন্য স্থানীয় লোকজনকে অবগত করেন। এ খবর বখাটেদের কানে গেলে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে নাটমিরচাই ঈদগাহ মাঠের সামনে নয়ন এবং বাবা ও ভাইয়ের পথরোধ করে তারা। তাদের হাতে ধারালো অস্ত্র ও রামদা ছিল। একপর্যায়ে বখাটেরা নয়নের বাম হাতের কবজি কেটে দেয় ও তার বড় ভাইয়ের পা কেটে দেয়। তাদের চিৎকারে প্রতিবেশিরা এগিয়ে আসলে বখাটেরা পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। তাদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কর্ব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে রেফার্ড করেন।

শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার বিপুল সরকার সমকালকে জানান, ধারালো অস্ত্রের কোপে একজনের হাতের কবজি এবং অপরজনের পা জখম হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদেরকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে পরীক্ষার্থী নয়নের বাবা আবুল কালাম বলেন, ‘আমার ছেলে চার নারী পরীক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় বখাটেরা এমন নির্মম ঘটনা ঘটিয়েছে।’ তিনি বখাটের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এ ঘটনায় নয়নের বাবা বাদী হয়ে শিবগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুঞ্জুরুল আলম বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।