মুরাদনগরের বাঙ্গরা বাজারে এক বাড়িতে দল বেঁধে ডাকাতি, গর্ভবতী গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ ও ধর্ষণের ঘটনার ৮ দিন পর অবশেষে মামলা নিয়েছে পুলিশ। 

সমকাল পত্রিকায় গত শুক্রবার সংবাদ প্রকাশের পর কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে ওই রাতে একজনকে এজাহারনামীয় ও আরও ৭/৮ জন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানায় ডাকাতি, ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করা হয়েছে। এর আগে এ ঘটনার পরদিন গত ১৬ সেপ্টেম্বর একই বিষয়ে থানায় অভিযোগ করতে গেলেও সত্য ঘটনাকে আড়াল করে সাধারণ চুরির অভিযোগ নিয়ে সময়ক্ষেপণ করা হয়। এর মাধ্যমে ঘটনার প্রধান আসামিকে পালিয়ে যেতে সহায়তার অভিযোগ উঠেছে বাঙ্গরা বাজার থানার এসআই ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে। তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকেই পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

মামলার প্রধান আসামি টনকী গ্রামের আনু মিয়ার ছেলে জাকির হোসেনের সঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ওমর ফারুকের ফোনে যোগাযোগ রয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। মোটা অঙ্কের উৎকোচের বিনিময়ে তাঁকে দেশত্যাগে সুযোগ করে দেয়ারও অভিযোগ উঠেছে এই তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও অভিযোগের তদন্ত করার সময় প্রধান আসামির শ্বশুরকে সঙ্গে নিয়ে যায় এই এসআই। প্রধান আসামির শ্বশুরকে সঙ্গে নিয়ে তদন্তে যাওয়ায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

শুক্রবার রাতে মামলা হওয়ার পর শনিবার দুপুরে ওই নারী কুমিল্লা শিশু ও নারী নির্যাতন দমন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। এর আগে তাঁকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ধর্ষণের আলামত পরীক্ষা করা হয়েছে।

এসআই ওমর ফারুক প্রধান আসামির শ্বশুরকে সঙ্গে নিয়ে তদন্তে যাওয়ায় বিষয়টি স্বীকার করলেও টাকা লেনদেন ও পালিয়ে যেতে সহায়তার বিষয়টি অস্বীকার করেন।

এ ব্যাপারে বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি ইকবাল হোসেন বলেন, বাদীর পরিবার প্রকৃত বিষয়টি তাঁদের কাছে প্রকাশ করেনি। ভুক্তভোগী আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁর ধর্ষণের আলামত পরীক্ষা করা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব অবহেলার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, আসামির শ্বশুরকে সঙ্গে নিয়ে তদন্তে যাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মুরাদনগর সার্কেল) পীযুষ চন্দ্র দাশ বলেন, এসপির মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেয়ে শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করেন। রাতেই মামলা হয়েছে। বিচার পেতে তাঁরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। ভিকটিমের পরিবারকে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশের অবহেলার বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

১৫ সেপ্টম্বর রাত দেড়টায় চাপিতলা গ্রামের এক বাড়িতে ৮/১০ জনের একটি ডাকাতদল ঘরে ঢুকে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে ধর্ষণ করে ও বিবস্ত্র অবস্থায় ভিডিও ধারণ করে। মেয়েটির গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য পেটে লাথি মেরে আহত করে তারা।