অসংক্রামক রোগ ও তামাকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে সব সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে নিজেদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার উপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করার লক্ষ্যে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছেন মেয়র এলায়েন্স ফর হেলদি সিটির নেতৃবৃন্দ।

কক্সবাজারের একটি তারকা মানের হোটেলে শুক্র ও শনিবার দুইদিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ মেয়র সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তারা। 

তামাকমুক্ত স্বাস্থ্যসম্মত নগরী গড়ার কর্মপরিকল্পনা তৈরির লক্ষ্যে কক্সবাজারে প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হয় দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলন। যেখানে রংপুরের সিটি মেয়রসহ সারা দেশের ২০ জন পৌর মেয়র এবং সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন সচিব অংশগ্রহণ করেন। 

শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে কলাতলীর একটি তারকা মানের হোটেলে আন্তর্জাতিক সংস্থা দি ইউনিয়নের কারিগরি সহযোগিতা, কক্সবাজার পৌরসভা, ধামরাই পৌরসভা, এইড ফাউন্ডেশন ও টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ সেল, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির যৌথ উদ্যোগে এ সন্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

 বাংলাদেশ মেয়র সামিট-এর চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন এনজিও ব্যুরোর মহাপরিচালক কেএম তারিকুল ইসলাম। 

কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমানের শুভেচ্ছা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া সম্মেলনে স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. খায়রুল ইসলাম, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হোসাইন আলী খন্দকার, যুগ্ম সচিব ফাহিমুল ইসলাম, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ড. মাহফুজুল হক বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন। 

এ ছাড়া ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী, দ্য ইউনিয়নের পরিচালক গান কোয়ান ও সংসদ সদস্য শামীম আহমেদ পাটুয়ারী বক্তব্য রাখেন। 

দু'দিন ব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ এ সম্মেলনে সারা দেশের ২০ জন মেয়র উপস্থিত ছিলেন। 

এ দিকে মেয়র এলায়েন্স ফর হেলদি সিটির বর্তমান চেয়ারম্যান রংপুরের সিটি মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত সকল মেয়রের সম্মতিক্রমে নতুন কমিটি ঘোষণা করেন। নবগঠিত ওই কমিটিতে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান। 

একইসঙ্গে সাভার পৌরসভার মেয়র হাজী আবদুল গণি কো-চেয়ারম্যান এবং ধামরাই পৌরসভার মেয়র গোলাম কবিরকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। 

সংগঠনের সদ্য সাবেক সদস্য সচিব মানিকগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নতুন কমিটিকে স্বাগত জানান। পরে উপস্থিত মেয়রগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ জানান মেয়র এলায়েন্স ফর হেলদি সিটির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান কক্সবাজারের নগর পিতা মুজিবুর রহমান। 

এর আগে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক ‘স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন নির্দেশিকা’ নামে একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের বিভিন্ন সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার মেয়ররা অসংক্রামক রোগ ও তামাক নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন সময়ে কর্মসূচি পালন ও যথাযথ ভূমিকা পালন করছেন।

প্রসঙ্গত: ‘এশিয়ান প্যাসিফিক সিটিজ এলায়েন্স ফর হেলথ্ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-এপিকেট’ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন শহরে মেয়রদের নিয়ে এ ধরনের সম্মেলনের আয়োজন করে থাকে। এরকম একটি সম্মেলন ২০১৮ সালে সিঙ্গাপুরেও অনুষ্ঠিত হয়। 

সেখানে বাংলাদেশের কিছু মেয়র এবং সংসদ সদস্যের সমন্বয়ে ‘মেয়র এলায়েন্স ফর হেলদি সিটি’ গঠিত হয়। যার মাধ্যমে বাংলাদেশের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে মেয়ররা তাদের স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠান ও সম্মিলিতভাবে কাজ করবার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। সেই ধারাবাহিকতায় কক্সবাজারে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।