শেরপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির রুমানকে দলীয় পদ থেকে বহিস্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। এ ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ছানোয়ার হোসেন ছানুসহ জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতা। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিউর রহমান আতিক দলীয় পদ থেকে হুমায়ুন কবিরকে বহিস্কারের সুপারিশের কথা জানান।

এর আগে বিকেলে শহরের উৎসব কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত সভায় স্বাগত বক্তব্যে হুইপ আতিউর রহমান আতিক জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে দলের গঠনতন্ত্রের ৪৭-এর ১১ ধারা পাঠ করে শোনান। এ সময় তিনি ওই ধারার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, 'জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কেহ দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হইলে দল হইতে সরাসরি বহিস্কার হইবেন।' তাই জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তকে অমান্য করে প্রার্থী হওয়ায় হুমায়ুন কবির রুমান অটোমেটিক বহিস্কার হয়ে গেছেন। বিষয়টি জেলা আওয়ামী লীগকে অবহিত করার জন্য সভাপতি হিসেবে তিনি এ সভা ডেকেছেন।

তবে সভাপতির এ বক্তব্যে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ছানোয়ার হোসেন ছানু। তিনি এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষরিত একটি চিঠি হুইপ আতিউর রহমানের হাতে দিয়ে বলেন, দল থেকে কাউকে বহিস্কারের এখতিয়ার শুধু আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের। কেউ দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে বিষয়টি কেন্দ্রীয় দপ্তরে পাঠাতে হবে। তা ছাড়া এবারের জেলা পরিষদ নির্বাচনে দল সমর্থিত দলীয় প্রতীক নেই। তাই হুমায়ুন কবিরকে বহিস্কার করতে হলে জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত লাগবে।

সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল বলেন, 'আমি ব্যক্তি নই, আওয়ামী লীগের প্রার্থী। যাঁরা বিদ্রোহী হয়েছেন, তাঁরা দলের স্বার্থের পরিপন্থি কাজ করেছেন। এটি চূড়ান্তভাবে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ।'

এদিকে হুমায়ুন কবির রুমানকে বহিস্কারের প্রতিবাদে রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের খরমপুর এলাকার আইডিয়াল স্কুলে এক জরুরি বৈঠকে বসেন জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতা। এ সময় বিদ্রোহী প্রার্থী হুমায়ুন কবির বলেন, জেলা কমিটি এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। হুইপ আতিউর রহমান আমার রাজনৈতিক জীবন ধ্বংসের জন্য মনগড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।