
হিমালয় ও বন্যার এই ছবি এখন স্মৃতি
পঞ্চগড়ে করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির তিন দিন পর নববধূ বন্যা রানী তার স্বামীর মরদেহ পেয়েছেন। আজ বুধবার বিকেলে তার স্বামী হিমালয় চন্দ্রের মরদেহ উদ্ধার করে উদ্ধার কর্মীরা।
সমকালকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নৌকাডুবির ঘটনায় খোলা তথ্য কেন্দ্রের প্রধান ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দীপঙ্কর রায়। তিনি বলেন, নৌকাডুবির তৃতীয় দিন শেষে হিমালয়সহ চারজন নিখোঁজ ছিলেন। তাদের জন্য উদ্ধারকাজ চলছে। আজ উদ্ধার কাজের চতুর্থ দিন। বিকেলে হিমালয়ের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। তার পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি জানান, এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ৬৯ জনের মরদেহ উদ্ধার হলো। এখনো তিনজন নিখোঁজ। তাদের উদ্ধারে অভিযান চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাত্র দেড় মাস আগে বিয়ে হয় হিমালয় ও বন্যা রানী। ডুবে যাওয়া নৌকায় বন্যাও ছিলেন। তবে তিনি বেঁচে ফিরলেও করতোয়ার জল কেড়ে নিয়েছে তার স্বামীকে।

হিমালয় চন্দ্র বোদা উপজেলার ময়দানদীঘি ইউনিয়নের খালপাড়া বিরেন চন্দ্রের একমাত্র ছেলে। তিনি বোদা পাথরাজ সরকারি কলেজ থেকে বিএসসি পাস করে দিনাজপুর সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে মাস্টার্স ফাইনাল পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। তার স্ত্রী বন্যা রানী পাশের গ্রামের রবি চন্দ্র রায়ের মেয়ে।
বুধবার দুপুরে হিমালয়ের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, শোকের মাতম চলছে। নির্বাক নববধূ বন্যা রানী। নৌকাডুবির পর থেকে তিনি কারো সামনে আসছেন না। খাওয়া-দাওয়াও করছেন না। ঘরের মধ্যে শুধুই কান্না করে চলেছেন।
হিমালয়ের বাবা বিরেন চন্দ্র বলেন, পূজা-আরাধনার জন্য ছেলে আর বউমা বদ্বেশ্বরী মন্দিরে যাচ্ছিল। ভগবানের কৃপায় বউমা বেঁচে ফিরলেও ছেলেটা ভগবানের কাছেই চলে গেল, এখন কী নিয়ে বাঁচব!
হিমালয়ের মা সারদা রানী শুধুই বিলাপ করছেন। অনেক কষ্টে কান্না থামিয়ে বললেন, 'আমাদের জীবনে আর কিছুই থাকল না।'
গত রোববার দুপুরে মহালয়া উপলক্ষে নৌকায় করে শতাধিক সনাতন ধর্মাবলম্বী পঞ্চগড়েরর বোদা উপজেলার মাড়েয়া এলাকা থেকে বদ্বেশ্বরী মন্দিরে যাচ্ছিলেন। তাদের নৌকাটি আওলিয়া ঘাটে করতোয়া নদীতে ডুবে যায়।
মন্তব্য করুন