- সারাদেশ
- ফরিদপুরে যুবলীগের হামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভা পণ্ড, আহত ২৫
ফরিদপুরে যুবলীগের হামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভা পণ্ড, আহত ২৫

হামলার ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন।
ফরিদপুরে যুবলীগের হামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মীসভা পণ্ড হয়ে গেছে। এ ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক দলের অন্তত ২৫ জন কর্মী আহত হয়েছেন। আজ বুধবার বিকেলে শহরের অম্বিকা মেমোরিয়াল হলে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাদের অভিযোগ, জেলা যুবলীগের আহবায়ক জিয়াউল হাসান মিঠু ও পৌরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মতিউর রহমান শামীমের নেতৃত্বে রামদা, লোহার রড ও লাঠিসোঁটা নিয়ে অর্ধশতাধিক হামলাকারী এ তাণ্ডব চালান। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এম এম জিলানী ও কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ইয়াছিন আলী মে উপস্থিত ছিলেন। তাদেরকে হামলাকারীরা আঘাত না করে হল থেকে বের করে দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অম্বিকা হল চত্বরে জিয়াউর রহমানের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান ও বেলুন উড়িয়ে কর্মীসভার সূচনা হয়। এরপর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে নিয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক জুলফিকার হোসেন জুয়েল অম্বিকা হলে ঢুকে নেতৃবৃন্দসহ আসন গ্রহণ করেন। ওই সময় হামলার ঘটনা ঘটে। প্রথমে যুবলীগের কয়েকজন নেতা হলরুমে হামলা করলে প্রতিরোধ করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মীরা। এরপর যুবলীগের ৫০/৬০ জন ব্যক্তি ওই কর্মী সমাবেশের ওপর হামলা করেন। স্বেচ্ছাসেবক দলের বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হন। পিটিয়ে আহত করা হয়েছে রাব্বী ইসলাম শুভ (১২) নামে মাইক অপারেটর এক শিশুকেও। পরে হামলাকারীরা ওই হলরুমের চেয়ার, সাউন্ডবক্স ও মাইক্রোফোন ভাংচুর করে।
ওই হামলার সময় হলরুম ও তার আশপাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্য ছিলেন না। পরে হামলার ঘটনার পর ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম এ জলিলের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যান। তবে তখন কেউ ওই হলরুমে ছিলেন না।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক জুলফিকার হোসেন বলেন, কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে যুবলীগের আহবায়ক জিয়াউল হাসান মিঠু ও পৌর কাউন্সিলর মতিউর রহমান শামীমের নেতৃত্বে এ হামলার হয়েছে।
তিনি বলেন, এ হামলায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক হাবিবুর রহমান হাফিজ, সদর উপজেলা আহবায়ক আবুল কালাম, সালথা উপজেলা সদস্য সচিব মামুন হাসান, সদরের যুগ্ম আহবায়ক ইদ্রিস বেপারী, পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের আহবায়ক রেজাউল তালুকদারসহ অন্তত ২৫ জন আহত হন। এরমধ্যে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে একজন ও ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলে তিনজন ভর্তি রয়েছেন। বাকিরা ওই দুই হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, হলরুমের মধ্যে এ কর্মীসভার জন্য জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছে। পৌরসভার কাছ থেকে হলটি ভাড়া নেওয়া হয়েছে।
ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম এ জলিল বলেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মীসভা চলছিল অম্বিকা মেমোরিয়াল হলের ভিতরে। ওই সভা চলাকালীন সময়ে হামলা চালানো হয়। ফলে সমাবেশটি পণ্ড হয়ে যায়। পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
ফরিদপুর পৌরসভার ২০ নম্বর কাউন্সিলর মতিউর রহমান শামীম বলেন, অম্বিকা হলে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভা চলছিল। জেলা যুবলীগের নেতাকর্মীরা ওখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে সমবেত হয়েছিল। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও মারামারি হয়। পরে আমি শুনতে পারি হলে হামলা হয়েছে, ভাংচুর হচ্ছে। এ খবর শুনে আমি পৌরসভার মালিকানাধীন হলটি রক্ষা করতে এগিয়ে যাই, খবর দেই ওসি-কে।
তিনি বলেন, আমি হামলা করিনি। বরং হামলার কবল থেকে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের রক্ষা করেছি। এটা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়কও জানেন।
জেলা যুবলীগের আহবায়ক জিয়াউল হাসান মিঠু বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যুবলীগ কর্মীরা সেখানে সমবেত হন। আমরা জানতাম না সেখানে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভা চলছে। আমি স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাদের হল থেকে বের হতে সাহায্য করেছি। কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। এ ঘটনায় কেউ আহত হয়েছে কিংবা চেয়ার, সাউন্ডবক্স ভাঙচুর করা হয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই।
মন্তব্য করুন