সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয়ী বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের স্ট্রাইকার কৃষ্ণা রাণী সরকার ও কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটনকে সংবর্ধনা দিয়েছে টাঙ্গাইল জেলা ক্রীড়া সংস্থা। শনিবার দুপুরে টাঙ্গাইল স্টেডিয়ামে জেলার দুই কৃতি সন্তানের সম্মানে এই সংবর্ধণা অনুষ্ঠানে আয়োজন করা হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান ফারুক।

জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ড. মো. আতাউল গনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন, পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহজাহান আনছারী, জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক আশরাফুজ্জামান স্মৃতি প্রমুখ। 

জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মির্জা মইনুল হোসেন লিন্টুর অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি হারুন অর রশিদ, যুগ্ম সম্পাদক মাতিনুজ্জামান সুখন, ইফতেখারুল অনুপম, কৃষ্ণার বাবা বাসুদেব সরকার, ছোট ভাই পলাশ সরকারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-সদস্যবৃন্দসহ সামাজিক, রাজনৈতিক, ক্রীড়ানুরাগীরা উপস্থিত ছিলেন। সংবর্ধণা অনুষ্ঠানে জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে কৃষ্ণা রাণী সরকারকে এক লাখ ও কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটনকে পঞ্চাশ হাজার টাকাসহ ক্রেস্ট দেয়া হয়। 

টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান ফারুক ব্যক্তিগতভাবে কৃষ্ণা রাণী সরকার ও কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটনকে স্বর্ণের চেন উপহার দেন। এছাড়াও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কৃষ্ণাকে এক লাখ, ছোটনকে পঞ্চাশ হাজার, পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে কৃষ্ণাকে এক লাখ ও ছোটনকে পঞ্চাশ হাজার, টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্যের পক্ষ থেকে দুইজনকে পঁচিশ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। 

অপরদিকে জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থা, সদর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থাসহ বিভিন্ন সংগঠণের পক্ষ থেকে সংবর্ধিতদের ক্রেস্ট দেয়া হয়। ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে সংবর্ধিতদের পরিবারের সদস্যসহ কৃষ্ণার স্কুল কোচ ও গোপালপুর সূতী ভিএম পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক গোলাম রায়হান বাপনকেও উপহার দেয়া হয়েছে।

এ সময় কৃষ্ণা রানী সরকার বলেন, 'পৃথিবীর আলো দেখার পর কখনোই সুখের মুখ দেখিনি। যেদিন থেকে বুঝতে শিখেছি, সেদিন থেকেই বাবা মাকে কষ্ট করতে দেখেছি। তারা অনেক কষ্ট করেছে। এই প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে অনেক প্রতিকুলতার মধ্যে দিয়ে ফুটবল খেলতে হয়েছে। সব বাঁধা বিপত্তি অতিক্রম করে আজ এখানে আসতে পেরেছি। আমার এই সাফল্য কোচ ও শিক্ষকদের সহযোগিতার জন্য হয়েছে। আরো ভাল পরিসরে খেলে দেশের জন্য ভাল কিছু উপহার দিতে পারি সেজন্য সকলের দোয়া চাই। আমি চাই এই প্রতিকূলতা ভেদ করে এখান থেকে আরো নারী ফুটবল খেলোয়াড় বেড়িয়ে আসুক। যারা দেশেকে অনেক উপহার দিতে পারবে।'

চ্যাম্পিয়ন দলের কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটন বলেন, 'সাফ জয় করে দেশে ফেরার পর থেকে নারী দল ভাসছে পুরস্কার ও সংবর্ধনায়। দলের ফুটবলারদের জন্য এটি অনুপ্রেরণার মনে করি। এই সাফল্যকে শক্তিতে পরিণত করে এই দল আগামীতে আরও ভাল ফল করার অনুপ্রেরণা পাবে। টাঙ্গাইল জেলা ক্রীড়া সংস্থার এমন একটি সংবর্ধনা থেকে কৃষ্ণা রানী থেকে আগামীর মেয়েরা আরও উৎসাহিত হবে। আরও এগিয়ে যাওয়ার উৎসাহ পাবে। এখানে যারা উপস্থিত সবাইকে আমি বলতে চাই, এ অর্জন আমাদের জন্য সহজ ছিল না। ফুটবল ফেডরেশনের সবার সহযোগিতায় আজ আমরা এটা অর্জন করতে পেরেছি। মেয়েরা কঠোর অনুশীলন করেছেন। অনেক কিছু ত্যাগ করেছেন। কষ্ট ও ত্যাগের পরই আমাদের এ অর্জন এসেছে। আমরা এখন দক্ষিণ এশিয়ার সেরা দল।'