- সারাদেশ
- ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ৫২
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ৫২

সংঘর্ষে হামলা ও ভাঙচুরের শিকার খান গোষ্ঠীর পক্ষের তাসলিমা আক্তারের ঘর। বাইরে ছড়িয়ে ঘরের ফ্রিজ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশ, নারী শিশুসহ উভয় পক্ষের ৫২ জন আহত হয়েছে। রোববার রোববার সন্ধ্যা সাতটা থেকে শুরু রাত নয়টা পর্যন্ত উপজেলার কুন্ডা ইউনিয়নের কুন্ডা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। আহতরা নাসিরনগর, সরাইল ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে সোমবার দুপুরে ৬০ জনকে আসামি করে এ্যাসল্ট মামলা দায়ের করেছে।
আহত তিন পুলিশ হলো- এসআই মো. সারুয়ার আলম, কনস্টেবল রাজীব তালুকদার ও আক্কাস মিয়া। তাদের নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমফ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কুন্ডা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনে মোল্লা গোষ্ঠীর লোকদের সর্মথন করতে আহবান জানানো হয় খান গোষ্টীকে। কিন্তু খান গোষ্ঠী কাউকে সমর্থন না করে নিরপেক্ষ থাকে। এ নিয়ে চাপা ক্ষোভের সঞ্চার হয় মোল্লা গোষ্ঠীর লোকজনদের মধ্যে। নির্বাচনের পরে খান গোষ্ঠীর রায়হানের সাথে মীর গোষ্ঠীর শামীম যেন চলাফেরা না করে সে জন্য নিষেধ করে মোল্লা গোষ্ঠীর জাবেদ। বিষয়টি নিয়ে রায়হান ও জাবদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে উভয় গোষ্ঠীর লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংষর্ঘে জড়ায়। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ তিন রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এ সময় সংষর্ষে তিন পুলিশ, নারী ও শিশুসহ ৫২ জন আহত হয়। সংঘর্ষের পর চলে লুটপাট ও বাড়িঘরে ভাঙচুর।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, খান গোষ্ঠীর রেজাউল, তাসলিমা ও রোজিনা বেগমের বাড়ির চার পাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে ভাঙ্গা ফ্রিজ, ঘরের দরজা-জানালা, বস্তার চাল ও আলমারির ভাঙ্গা কাচের টুকরা। একই দৃশ্য চোখে পড়ে মোল্লা বাড়ির কুদ্দুস মিয়ার বাড়িতেও।
খান গোষ্ঠীর তাসলিমা বেগম ও রোজিনা আক্তার জানান, তাদের বাড়িতে পুলিশের উপস্থিতিতে হামলা চালায় মোল্লা গোষ্ঠীর লোকজন। এ সময় তাদের বাড়ি থেকে গোয়ালের গরু ও খোয়ারের মুরগি লুট করা হয়। পরে ঘরে থাকা ফ্রিজ, আলমারি ভাঙ্চুর করে স্বর্ণালংকার লুট করার অভিযোগ করেন তারা। মোল্লা গোষ্ঠীর কুদ্দুস মিয়া বলেন, খান বাড়ির লোকজন আমাদের উপর হামলা করে নগদ দুই লাখ টাকা ও পাঁচ ভরি স্বার্ণালংকার নিয়ে গেছে।
মোল্লা গোষ্ঠীর প্রধান সেলিম মোল্লার দাবি উমরাও খানের লোকজন তাদের পক্ষের জাবেদ মোল্লার উপর তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারধর করে। পরে তা গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বে রুপ নেয়। তাদের হামলায় তাদের পক্ষের প্রায় ২০ জন আহত হয়। তিনি বলেন, আমার পক্ষের কুদ্দুস মিয়ার বাড়িতে হামলা করে লুটপাট চালায় তারা। সে সময় ৫ ভরি স্বর্ণ লুট ও ঘরবাড়ি ভাঙ্চুর চালায়।
তবে এ দাবি প্রত্যাখান করে খান গোষ্ঠীর প্রধান ওমরাও খান বলেন, স্কুল কমিটির নির্বাচনে সেলিম মোল্লাদের সমর্থন না করায় আমাদের সাথে পরিকল্পিতভাবে সংঘর্ষে জড়ায় মোল্লা গোষ্ঠীর লোকজন। এসময় আমাদের পক্ষের লোকদের পাঁচটি বাড়িতে হামলা করে লুটপাট ও ভাঙচুর চালায়। এছাড়াও চারটি গরু, নগদ ১০ লাখ টাকা ও মেয়েদের কান ও গলা থেকে স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায় তারা।
নাসিরনগর থানার ওসি মো. হাবিবুল্লাহ সরকার বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর লোকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের তিনজন আহত হয়েছে। উভয় পক্ষের কিছু লোকজনও আহত হওয়ার খবর পেয়েছি।
মন্তব্য করুন