নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ শিকারে যাওয়ায় বরিশালের হিজলা উপজেলা সংলগ্ন মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়ে ২১ জেলেকে আটক করেছে নৌপুলিশ। রোববার দিবাগত রাতে এবং সোমবার দুপুর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে এসব জেলেকে আটক করা হয়। এ সময় ৮ লাখ মিটার নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল ও ৫৫ কেজি ইলিশ জব্দ করা হয়।

হিজলা নৌ পুলিশ সূত্র জানায়, আটক জেলেদের মধ্যে চার জনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের এবং বাকি ১৭ জেলেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এক বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। জব্দ করা মাছ একাধিক এতিমখানাসহ দুস্থদের মধ্যে বিতরণ এবং আট লাখ মিটার নিষিদ্ধ জাল পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত এবং মামলার আসামি ২১ জেলেকে আজ সোমবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

হিজলা নৌ পুলিশের পরিদর্শক বিকাশ চন্দ্র দে জানান, সোমবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর পর্যন্ত হিজলা সংলগ্ন মেঘনা নদীতে যৌথ অভিযান চালায় নৌ পুলিশ ও মৎস্য বিভাগ। এ অভিযানে ৯ জেলেকে আটক করা হয়। আটক জেলেরা হলেন জাহাঙ্গীর হাওলাদার (৩৫), মো. মামুন বহদ্দার (৪০), আবুল কালাম সিকদার (২৫), মো. নাসির উদ্দিন (২১), সোলায়মান খান (২২), মো. রাসেল মন্ডল (৩০), মো. সাইফুল খান (২৪), মো. মোশারেফ হোসেন (২৫) ও মোবারক খন্দকার (৩৫)। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা ইলিশ নিধনে নামার অপরাধ স্বীকার করায় তাদের প্রত্যেককে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ তারেক হাওলাদার মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইনে এক বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন।

হিজলা নৌ পুলিশ সূত্র জানায়, রোববার রাতের অভিযানে আটক ১২ জেলের মধ্যে সাত জনকে এক বছরের বিনাশ্রম করাদণ্ড এবং চার জেলের বিরুদ্ধে মৎস্য সংরক্ষণ আইনে হিজলা থানায় মামলা করা হয়েছে। এক জেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় মুচলেকা নিয়ে তাকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ তারেক হাওলাদার ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৭ জেলেকে কারাদণ্ড দিয়েছেন।

বিকাশ চন্দ্র দে জানান, ইলিশের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করতে রোববার দিবাগত রাতে নৌপুলিশ ও মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা যৌথভাবে মেঘনা নদীতে অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযান চলাকালে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় ১২ জেলেকে আটক করা হয়। আটক জেলেদের মধ্যে মো. বেল্লাল হোসেন (২৭), মো. ইমরান হোসেন (২২), মিলন বেপারী (২৮), নিরব পাইক (১৯) এর বিরুদ্ধে হিজলা থানায় মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইনের ৫ (২) ধারায় নিয়মিত মামলা দায়ের করে হিজলা থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। এছাড়া রিয়াদ বাঘা (২০), মামুন সিকদার (২২), জাহাঙ্গীর বেপারী (২৪), শাহজাহান ফরাজি (৩৮), মাসুদ খান (২৪), জাহিদ খান (১৯) ও সাইদুল সরদারকে (২৭) অপরাধ স্বীকার করায় এক বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ সময় আবু বকর সিকদার (৩৫) নামের এক জেলে শারিরীক প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেওয়ার আদেশ দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।