জীবিত থেকেও কাগজ-কলমে মৃত মিলন নেছা। এই নারীর নামে মৃত্যু সনদ দিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল রহিম পারভেছ। তাতে দেখানো হয়েছে, ২৩ বছর আগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার ৫ নম্বর পূর্বধইর পশ্চিম ইউনিয়নের খৈয়াখালী গ্রামে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, খৈয়াখালী গ্রামের মুন্সি বাড়ির মৃত জয়দল হোসেনের স্ত্রী মিলন নেছা (৬৫)। তাঁর নামে গত ১৮ সেপ্টেম্বর মৃত্যু সনদপত্র দেওয়া হয়েছে। এর নম্বর ২০২২১৯১৮১৮১০০৫২৯৭। এতে বলা হয়েছে, ১৯৯৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেছেন মিলন নেছা। অথচ জীবিত তিনি।

ইউপি চেয়ারম্যানের দেওয়া মৃত্যুর সনদপত্রটি সমকাল প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ে গত শুক্রবার বিকেলে ভুক্তভোগী বৃদ্ধার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে তিনি বলেন, বিষয়টি জানা নেই তাঁর। বিষয়টি নিয়ে তাঁর ছেলে জাকির হোসেনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে আর কথা বলেননি। এক পর্যায়ে তাঁর মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে রাখেন। অভিযোগ রয়েছে, মাকে না জানিয়েই বিশেষ উদ্দেশ্যে মৃত্যুর সনদপত্রটি গ্রহণ করেন ছেলে জাকির হোসেন।

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান যাচাই-বাছাই না করে জীবিত মানুষকে মৃত দেখিয়ে সনদ দেওয়ার বিষয়টি রহস্যজনক। এ ব্যাপরে আইনজীবী সৈয়দ তানভীর আহাম্মদ ফয়সাল বলেন, জীবিত ব্যক্তিকে মৃত্যুর সনদ দেওয়া জঘন্য অপরাধ। বিশেষ উদ্দেশ্যে ঘটনা ঘটিয়ে থাকলে বিষয়টি প্রমাণিত হলে ওই চেয়ারম্যানের জেল জরিমানা বা চেয়ারম্যানের পদ থেকে অপসারণ হতে পারেন।

পূর্বধইর পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মামুনের ভাষ্য, কীভাবে মৃত্যুর সনদ দেওয়া হয়েছে, সে সম্পর্কে কিছুই জানেন না তিনি। যে মিলনের নেছার নামে মৃত্যুর সনদ দেওয়া হয়েছে, তিনি তো জীবিত।

ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল রহিম পারভেছ জানান, তাঁর কাছ থেকে তথ্য গোপন করে মিলনের নেছার মৃত্যুর সনদটি নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

মুরাদনগর ইউএনও আলাউদ্দিন ভূঁইয়া জনি বলেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। তবে এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।