- সারাদেশ
- বর্ষা গেলেও ভাঙনের আতঙ্ক যায়নি আমিরাবাদে
বর্ষা গেলেও ভাঙনের আতঙ্ক যায়নি আমিরাবাদে

লোহাগাড়ার আমিরাবাদ ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত টংকাবতী খালের ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে গ্রামীণ সড়ক; ফলে স্থানীয়রা হেঁটেও চলতে পারছেন না সমকাল
লোহাগাড়ার আমিরাবাদ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ৪টি খালে প্রায় ছোট-বড় ১৩টি ভাঙন দেখা দিয়েছে। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির ফলে খালের পানি বাড়ায় এ ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষা চলে গেলেও ভাঙনের আতঙ্ক রয়ে গেছে। ভাঙনে বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট বিলীন হচ্ছে নদীতে। আগামী বর্ষার আগে ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে সহস্রাধিক বসতঘর, ভিটা, কৃষিজমি, মসজিদ, কবরস্থান ও চলাচলের রাস্তা বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই ভাঙন অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে হয়েছে বলে দাবি করছেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, আমিরাবাদ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ডলু, টংকাবতী, বোয়ালিয়া ও বাইরখাল। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও তীর রক্ষায় উদ্যোগ না থাকায় খালের পাড় ভেঙে গেছে। ডলুখালের মাস্টারপাড়া সড়ক, টংকাবতী খালের বণিকপাড়া, বোয়ালিয়া খালের রোকেয়া বাপেরপাড়া জামে মসজিদ এলাকা ও বাইরখালের মৌলানাপাড়া সংলগ্ন এলাকায় ছোট-বড় প্রায় ১৩টি ভাঙন দেখা দিয়েছে। অনেক স্থানে খালের পাড় স্থানীয়দের চলাচলের রাস্তা। ভাঙনের কারণে যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
গত ২৯ জুন মাস্টারপাড়া এলাকায় ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও মাটি কাটায় জনৈক আবুল কাশেম চৌধুরী নামে এক ব্যক্তিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছিলেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এরপরও থেমে নেই মাটি কাটা ও বালু উত্তোলন। ফলে খালের ভাঙন তীব্র হচ্ছে।
সরেজমিন দেখা যায়, আমিরাবাদ ইউনিয়নের ডলু, টংকাবতী, বোয়ালিয়া ও বাইরখালে রয়েছে ছোট-বড় একাধিক ভাঙন। ভাঙনের কারণে ঝুঁকিতে রয়েছে আশপাশের বসতঘর, চলাচলের রাস্তা, মসজিদ ও ফসলি জমি। মাস্টারপাড়া এলাকায় রাতের আঁধারে এখনও কাটা হচ্ছে ডলুখালের পাড়। ড্রেজার মেশিন দিয়ে খালের পাড় ভেঙে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু। খালের পাড় ভাঙনে অনেক স্থানে চলাচলের রাস্তাও বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয়রা জানায়, আগামী বর্ষা মৌসুমে টানা বৃষ্টি হলে খালের ভাঙন দিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়বে। এতে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে বসতঘর ও ক্ষেতের।
রোকেয়া বাপের জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোস্তাক আহমেদ বলেন, 'বোয়ালিয়া খালের প্রায় ২০ ফুট গভীর ভাঙনে চলাচলের রাস্তা, মসজিদ ও প্রাচীন কবরস্থান অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে। এলাকাবাসীর অক্লান্ত পরিশ্রমে নির্মিত মসজিদটি রক্ষায় দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।'
স্থানীয় ইউপি সদস্য হোছাইন মুহাম্মদ শারপু জানান, তাঁর ওয়ার্ড দিয়ে প্রবাহিত ডলু, টংকাবতী, বাইর ও বোয়ালিয়া খালে ভাঙনের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। সম্প্রতি ঘন ঘন বৃষ্টিতে খালের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে ভাঙন এলাকায় খালের মধ্যে বিলীন হয়ে যেতে পারে বসতঘর, চলাচলের রাস্তা, মসজিদ ও কবরস্থান। ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন তিনি।
লোহাগাড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) এম. ইব্রাহিম কবির বলেন, 'আমিরাবাদ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ডলু, টংকাবতী, বাইর ও বোয়ালিয়া খালের ভাঙন পরিদর্শন করা হবে। স্থানীয় জনসাধারণের সঙ্গে কথা বলে পরিদর্শনের পর ভাঙনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন