বিএনপির কর্মসূচির পর খুলনায় বড় ধরনের সমাবেশের পরিকল্পনা রয়েছে আওয়ামী লীগের। খুলনার রাজনীতির মাঠ নিজেদের দখলে রাখা এবং বড় জমায়েতের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান জানান দিতেই এই সমাবেশ করা হবে। ইতোমধ্যে দলীয় ফোরামে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরলে সমাবেশের তারিখ চূড়ান্ত করা হবে। এদিকে বিএনপির গণসমাবেশের আগের দিন শুক্রবার নগরীতে বড় শোডাউন করেছে আওয়ামী লীগ।

খুলনা সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম জানান, খুলনাসহ সারাদেশে সমাবেশের নামে বিএনপি যে অপপ্রচার চালাচ্ছে, দেশকে অস্থিতিশীল করার হুমকি দিচ্ছে, তাতে মানুষ উদ্বিগ্ন। সাধারণ মানুষকে অভয় দেওয়া এবং দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রাখতেই এই সমাবেশ করা হবে।

খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা সমকালকে বলেন, গণসমাবেশকে সামনে রেখে খুলনায় বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বিভিন্ন অপপ্রচার চালিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সম্পর্কে বিভিন্ন মিথ্যাচার করেছেন। রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগ এগুলোর জবাব দিতে চায়। সে কারণে তাঁরা শিগগিরই সমাবেশ করতে চান।

খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুজিত কুমার অধিকারী বলেন, তাঁরা পেশিশক্তি প্রদর্শনে বিশ্বাসী নন। রাজনৈতিক কর্মসূচি রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করা হবে। বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের পর তাঁরাও বড় জমায়েত করার পরিকল্পনা নিয়েছেন। সেই সমাবেশে সব অপপ্রচারের দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।

গতকাল নগরীতে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ব্যানারে কর্মসূচি পালন করলেও সেখানে আওয়ামী লীগ ও এর সব অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা যোগ দেন। তাঁদের মিছিল বিএনপির সমাবেশস্থল অতিক্রমের সময় রাস্তার দুই পাশের ব্যানার-ফেস্টুন ভাঙচুর করা হয়।

বিএনপি-জামায়াতের 'দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র, নৈরাজ্য ও অপপ্রচারের' প্রতিবাদে শুক্রবার বিকেলে নগরীর শিববাড়ি মোড়ে সমাবেশ করেন যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতারা। ট্রাক, পিকআপ, মোটরসাইকেলে কয়েক হাজার নেতাকর্মী সেখানে যোগ দেন। সেখানে সংক্ষিপ্ত শেষে সমাবেশ শেষে সন্ধ্যায় বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তাঁরা।

মিছিলটি সঙ্গীতা মোড়, ফেরিঘাট মোড়, ডাকবাংলো মোড়, পিকচার প্যালেস মোড় ঘুরে হাদিস পার্কের সামনে আওয়ামী লীগ কার্যালয় চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। ওই সড়কের দুই পাশে বিএনপির গণসমাবেশের সফলতা কামনা করে লাগানো ফেস্টুন ভাঙচুর করা হয়।

মিছিলে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, জেলা সাধারণ সম্পাদক সুজিত কুমার অধিকারী, খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আকতারুজ্জামান বাবু, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক কামরুজ্জামান জামাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের মিছিল থেকে আমাদের নেতাকর্মীদের লাগানো অসংখ্য ফেস্টুন ভাঙচুর করা হয়েছে। তবে মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক শফিকুর রহমান পলাশ বলেন, তাঁদের মিছিল ছিল সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। কারও হাতে লাঠি পর্যন্ত ছিল না। কারা ভাঙচুর করেছে জানেন না তিনি। তাঁরা যুবলীগের কেউ না।

এর আগে দুপুর ১২টায় বিএনপি কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং চলাকালে আওয়ামী লীগের একজন কাউন্সিলরের নেতৃত্বে শ্রমিক লীগ বিএনপি কার্যালয়ের সামনের সড়কে মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দেয়। এ ছাড়া তারা নগরীর ৪, ৫, ৬ ও ৭ নম্বর ঘাট এলাকায়ও একইভাবে মহড়া দেয়।