বছর দুয়েক আগে ভালোবেসে বাংলাদেশি যুবক গোলাম সারোয়ার বাবুকে (২৬) বিয়ে করেন মিসরীয় তরুণী ডালিয়া (২৬)। সম্প্রতি ওই তরুণী স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে এসেছেন নোয়াখালীর সেনবাগে তার শ্বশুরবাড়িতে । এদিকে, বিদেশি বধূকে দেখতে আশপাশের এলাকার মানুষ ভিড় করছেন বাবুর বাড়িতে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই দম্পত্তি নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলার নবীপুর ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের গোবিন্দপুর গ্রামে তাদের বাড়িতে আসেন। বিয়ের পর প্রথমবারের মতো ওই দম্পতি বাংলাদেশে আসেন।

গোলাম সারোয়ার বাবু জানান, ২০১২ সালে জীবিকার সন্ধানে তিনি মিসরে যান। সেখানে তিনি একটি গার্মেন্টেসে চাকরি করেন। মিসরে তিনি ডালিয়াদের বাসার পাশেই থাকতেন । ডালিয়ার ভাইয়ের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব ছিল। এ কারণে ডালিয়াদের বাসায় যাতায়াত ছিল তার। এক সময় বাবু মিসরীয় তরুণী ডালিয়াকে তার ভালো লাগার বিষয়টি জানান। এতে ডালিয়া সায় দিলে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

তিনি আরও জানান, ২০১৮ সালের দিকে ডালিয়ার পরিবারের কাছে বাবু বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু ওই পরিবারের কেউই বিয়েতে রাজি হননি। পরে ডালিয়া অনেক কান্নাকাটি করে তার মা-বাবাকে রাজি করান। ২০২০ সালে ওই দেশের আইন কানুন মেনে পারিবারিকভাবেই মিসরে বাবু আর ডালিয়ার বিয়ে হয়। গত বছর তাদের একটি বাচ্চা হয়। পরে সে মারা যায়। এরপর এই প্রথম তাদের দুজনের এক সাথে দেশে আসা। বর্তমানে তারা সুখে-শান্তিতে দিন কাটাচ্ছেন। বিদেশি পুত্রবধূকে কাছে পেয়ে তার বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যরা আনন্দিত বলেও জানান তিনি।

মিসরীয় তরুণী ডালিয়া বাংলা বলতে না পারলেও মিসরী ভাষায় সংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। মিসরীয় ভাষা বাংলা অনুবাদ করে তার স্বামী বাবু সাংবাদিকদের বলেন,  বাংলাদেশি খাবার এবং পরিবেশ ডালিয়ার ভালো লেগেছে। এটা তার স্বামীর দেশ। এ দেশকে তিনি অনেক ভালবেসেন।  তবে মাংসের চেয়ে আলু তার বেশি পছন্দ বলেও মন্তব্য করেন এ বিদেশি তরুণী । তবে কারো সাথে মনের কথা প্রকাশ করতে না পারায় তার কষ্ট হয়। শ্বশুর বাড়িতে দুই মাস থেকে আবার মিসর ফিরে যাবেন বলেও জানান তিনি।
 
বাবুর বাবা গোলাম মাওলা মিয়া বলেন, পুত্রবধূ বাংলা ভাষা বলতে না পারলেও ইশারায় ইঙ্গিতে কথা বলছে। বিদেশিনী পুত্রবধূকে কাছে পেয়ে পরিবারের সবাই আনন্দিত।   

নবীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন সোহেল বলেন,  বিদেশি পুত্রবধূকে দেখার জন্য শত শত মানুষ তাদের বাড়িতে ভিড় করছে। গ্রামের মানুষ এতে খুশি। ছেলে-পুত্রবধূর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।