অঘোষিত বাস ধর্মঘটে চরম ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ। শুক্রবার থেকে খুলনাগামী বাস চলাচল বন্ধ থাকায় প্রথমদিনের মতো শনিবারও যাত্রীরা সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা,  মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ  থেকে ছেড়ে আসা বাস আটকে যাচ্ছে যশোরে। একই সাথে আঞ্চলিক রুটের বাস চলাচলও বন্ধ রয়েছে।  যাত্রীরা ভেঙে ভেঙে বিকল্প যানবাহনে গন্তব্যে যাচ্ছেন। এজন্য তাদেরকে গুণতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া।

এদিকে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় ট্রেন ছিল খুলনাগামী যাত্রীদের ভরসা। শনিবার সকাল থেকে বন্ধ হয়ে গেছে ট্রেন চলাচলও।

পরিবহন শ্রমিকরা জানান, শনিবার খুলনায় বিএনপির গণ সমাবেশ থাকায় যশোর থেকে খুলনাগামী শুক্রবার সকাল থেকে খুলনাগামী যাত্রীবাহী সব ধরণের পরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ১৯ রুটের বাস যশোর টার্মিনালে এসে থেমে যাচ্ছে। শুক্রবারের মতো শনিবারও যশোর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী যাত্রীবাহী পরিবহন যশোর বাস টার্মিনালে এসে থেমে যাচ্ছে। কোনো ধরণের নোটিশ ছাড়াই মানুষকে বাস থেকে যশোরে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে ইজিবাইক বা নছিমনে করে তাদের ভেঙে ভেঙে যেতে হচ্ছে। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে যাত্রীদের।

যশোর টার্মিনালে কথা হয় পিরোজপুর মঠবাড়িয়ার মালতি রাণীর (৫৫) সাথে। তিনি দেড় মাস ভারতের কলকাতার একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা শেষে শনিবার সকালে বেনাপোল দিয়ে যশোরে আসেন। বেনাপোল থেকে আঞ্চলিক রুটের বাসে করে যশোর টার্মিনালে এসে তিনি খুলনাগামী কোন বাস না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন। ক্ষুদ্ধ এই নারী বলেন, কলকাতা থেকে অপারেশন শেষে শনিবার সকালে যশোর পৌঁছেছি। অসুস্থ শরীর নিয়ে একটা বাস কাউন্টারে ৪-৫ ঘন্টা বসে আছি, কোন উপায় পাচ্ছি না। বসে থাকতে থাকতে আরো অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শোভন জানান, সোমবার তার ভাইভা পরীক্ষা রয়েছে। গাড়ি বন্ধ থাকায় খুলনায় যেতে পারছেন না। তিন ঘন্টা বসে থাকার পর অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে ইজিবাইক  বা নছিমনে করে ভেঙে ভেঙে যাওয়ার কথা ভাবছেন।

যশোর জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আজিজুল আলম মিন্টু বলেন, এটা আমাদের কোন ধর্মঘট না। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো নিষেধাজ্ঞাও নেই। কেউ যাতে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে পরিবহন মালিকরা পরিবহন বন্ধ রেখেছে। শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে পরিবহনগুলো স্বাভাবিক হবে বলে মালিক পক্ষ থেকে ইঙ্গিত পেয়েছি।

যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু জানান, খুলনার মহাসবেশে যাওয়া ঠেকাতে সরকার অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এতে পরিবহন মালিকরা খুলনা রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। পুলিশ ৬৩ নেতাকর্মীকে আটক করেছে। সব বাধা পেরেয়ি মহাসড়ক বাদ দিয়ে আঞ্চলিক সড়কে নছিমন, ট্রাক, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল করে যশোর থেকে ১০ হাজার নেতাকর্মী সমাবেশে যোগ দিয়েছে। এছাড়া ট্রেনে করেও বিএনপি নেতারা খুলনায় পৌঁছাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।