ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর উপকূলীয় এলাকায় স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৬ ফুট বেশি পানি হয়। জোয়ারের তোড়ে বেড়িবাঁধের প্রায় ২৫ কিলোমিটার লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। অন্যদিকে, উপকূলীয় এলাকাজুড়ে সাগরের পানিতে বিলীন হয়ে গেছে অর্ধশতাধিক চিংড়ি ঘের। এতে ঋণ নিয়ে মাছ চাষ করা ব্যক্তিরা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন। উপজেলার সরলের ১ নম্বর ওয়ার্ড উত্তর সরল এলাকার মাছ চাষি মো. ফারুক বলেন, আমাদের তিনটি মাছের প্রজেক্ট থেকে ৩০ লক্ষাধিক টাকার কোরাল, বাটা ও চিংড়ি মাছ সাগরে ভেসে গেছে।

ছনুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম হারুনুর রশিদ জানান, ছনুয়ার ৮ ও ৯ ওয়ার্ডের জনগণ এখনও পানিবন্দি। বেড়িবাঁধসহ রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় মানুষ চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।

জোয়ারের প্রবল স্রোতে বাঁশখালীর উপকূলীয় ছনুয়া ইউনিয়নে প্রায় ৪ কিলোমিটার, শেখেরখীল ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টে প্রায় ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার, গণ্ডামারা ইউনিয়নে ৩ কিলোমিটার, সাধনপুর ইউনিয়নে ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার, চাম্বলে শূন্য দশমিক ৬৫ কিলোমিটার, সরল ইউনিয়নে শূন্য দশমিক ৫০ কিলোমিটার, খানখানাবাদ ইউনিয়নে ১ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এদিকে, সিত্রাংয়ের কারণে বেড়িবাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করায় নির্ঘুম রাত কাটান বাঁশখালীর উপকূলীয় খানখানাবাদ, সরলের জালিয়াখালী বাজার সংলগ্ন কাহারঘোনা, মিনজীরিতলা, বাহারছড়া, গণ্ডামারা, ছনুয়ার খুদুকখালী, হনুয়ার টেক শেখেরখীল, শীলকুপের মনকিচর, পুঁইছড়ি, সাধনপুর, কাথরিয়াসহ অন্যান্য এলাকার মানুষ। বেশ কিছু এলাকা দিয়ে বেড়িবাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করায় ফসলি ও ধানি জমির ক্ষতি হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপবিভাগীয় প্রকৌশলী প্রকাশন চাকমা জানান, ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ অংশে দ্রুত মেরামতের কাজ শুরু করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান চৌধুরী জানান, দুর্যোগে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বাড়িঘর আংশিক, শতাধিক বাড়িঘর সম্পূর্ণ, ক্ষেত, বেড়িবাঁধ ও রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুর্গতদের সব ধরনের সহায়তা করা হচ্ছে।