সংসারের খরচ কমিয়ে প্রতি মাসে কিছু টাকা সঞ্চয় করতেন গাজীপুরের পোশাক শ্রমিক কমল পাল। মূল বেতন ৮ হাজার ৩০০ টাকা হলেও ওভারটাইম করে মাস শেষে ১৪ হাজার টাকা পেতেন তিনি। এ টাকায় ৫ সদস্যের সংসার চালানোর পাশাপাশি কিছু টাকা সঞ্চয়ও করতেন। তবে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটে কারখানায় উৎপাদন কমে যাওয়ায় ওভারটাইম বন্ধ। এতে সংকটে পড়েছেন তিনি।

জানা গেছে, কয়েক মাস ধরে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটের কারণে গাজীপুরের কারখানাগুলোতে উৎপাদন কমে গেছে। এতে সেখানে কর্মরত শ্রমিকরা ওভারটাইম করতে পারছেন না। ফলে নির্ধারিত বেতনেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে তাঁদের। তবে এই টাকায় সংসার চলছে না তাঁদের। তাই সঞ্চয় ভেঙে সংসার চালাতে হচ্ছে এসব পোশাক কারখানার শ্রমিকদের।

কমল পাল, শাহীন, বাদল মিয়াসহ অন্তত ২০ থেকে ২৫ জন শ্রমিক এই প্রতিবেদককে জানান, সঞ্চয় করা টাকা শেষ হয়ে গেছে সপ্তাহ দুই আগে। ওভারটাইম না থাকায় মূল বেতনের বাইরে আর কোনো টাকাই পাচ্ছেন না তাঁরা। ঘর ভাড়া, ছেলেমেয়ের স্কুলের বেতন, বিদ্যুৎ বিল, চাল-ডাল-তেল-নুন কেনা সবই করতে হয় এই টাকায়। অসুস্থ হলে ওষুধও কিনতে হয়। খুব কষ্টে তাঁদের জীবন পার হচ্ছে।

কয়েকজন কারখানা মালিক জানান, গাজীপুরে চলছে গ্যাসের তীব্র সংকট। সন্ধ্যার পর গ্যাসের চাপ কমে আসায় কারখানা বন্ধ করে দিতে হয়। কয়েক মাস ধরেই প্রতিটি কারখানায় গ্যাসের চাপ কম। ফলে কারখানায় উৎপাদনও কমে যাচ্ছে এবং সময়মতো দিতে না পারায় অনেক অর্ডার বাতিল হচ্ছে। তাই শ্রমিকদের কাজ কমে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে অল্প কিছুদিন পর থেকেই শ্রমিক ছাঁটাইয়ের পথ বেছে নিতে হবে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের গাজীপুর অঞ্চলের উপমহাপরিদর্শক আহমেদ বেলাল জানান, জেলায় ২ হাজার ৩০০ শিল্পকারখানা রয়েছে। এতে শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার।

গাজীপুর জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেন, গাজীপুর জেলার সব কারখানার অবস্থা এক নয়। বেশিরভাগ কারখানার শ্রমিকরা ভালো আছেন। ওভারটাই করতে পারছেন। কোনো কোনো কারখানায় হয়তো সাময়িক সংকট তৈরি হয়েছে। সংকট কাটাতে সংশ্নিষ্টরা কাজ করছেন।