স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে একটি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ভরাডুবি দেখেছে আওয়ামী লীগ। এ আসনে বিপুল জয় পেয়েছেন স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীর এক নেতা। স্বতন্ত্র এই প্রার্থীর কাছে করুণ পরাজয় হয়েছে ক্ষমতাসীন দলের হেভিওয়েট প্রার্থীর।

এবার কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকলেও নৌকা প্রতীক নিয়ে ৫ হাজার ১৪০ ভোটের বড় ব্যবধানে হেরেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু আহমদ নজমুল কবির মুক্তা। গত ২ নভেম্বর উপজেলার দুর্লভপুর ইউপি নির্বাচনে তিনি পান মাত্র ১৩ হাজার ৫৯৪ ভোট।

ইউপি চেয়ারম্যান পদে অভূতপূর্ব বিজয় পেলেও সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য পদে সুবিধা করতে পারেনি জামায়াত। দুর্লভপুরের ৯টি ওয়ার্ড ও তিনটি সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ১০ জন ও বিএনপির দু'জন নির্বাচিত হলেও জামায়াতের তিন প্রার্থীর কেউই জয়লাভ করতে পারেননি।

পরাজিত প্রার্থী মুক্তা বলেন, সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান আবদুর রাজিব রাজু এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ ছিলেন। সেই ক্ষোভ থেকে আমাকে হারাতে কাজ করেছেন তিনি। তাঁর অনুসারী দলের বহু নেতাকর্মী আমাকে ভোট দেননি। তাঁরা জামায়াতের প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা খেয়ে ভোট বিক্রি করেছেন।

সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য রাজু বলেন, দলের অন্তর্কোন্দলের কারণে মুক্তার মতো হেভিওয়েট নেতার করুণ পরাজয় হয়েছে। তিনি দায় চাপাচ্ছেন আমার ঘাড়ে। অথচ এর আগের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের তিনজন বিদ্রোহী প্রার্থী থাকার পরও বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলাম।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি হারুন অর রশিদ বলেন, বিশেষত দুটি কারণে এবার দুর্লভপুরে দলের ভরাডুবি হয়েছে। অন্তর্কোন্দলের কারণে স্থানীয় নেতাকর্মীরা মেম্বার প্রার্থীদের নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তাঁরা চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে কাজও করেননি, ভোটও দেননি। এ ছাড়া উপজেলার জ্যেষ্ঠ নেতারা আগামী সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে ব্যস্ত থাকায় ইউপি নির্বাচনের প্রচারে নামেননি।

শিবগঞ্জ পৌর জামায়াত আমির বিজয়ী প্রার্থী গোলাম আজম বলেন, দলীয় নেতাকর্মীর পাশাপাশি সাধারণ ভোটাররা সজাগ থাকায় এবার ভোটে অনিয়ম হয়নি। এ কারণে আমার জয় কেউ ঠেকাতে পারেনি।