গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার রামশীল ইউনিয়নের গ্রাম শৌলদাহ মুশুরিয়া। এ গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে কুমার নদ। গ্রামটিতে প্রায় ৬ হাজার মানুষের বসবাস। নদের পূর্বপাড়ে রয়েছে দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। রয়েছে একাধিক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। পশ্চিমপাড়ের শিক্ষার্থী ও জনগণকে পূর্বপাড়ে যেতে হলে নদ পার হতে হয়। পূর্বপাড়ে বসবাসকারীদেরও একই অবস্থা।

শুধু শৌলদাহ মুশুরিয়াই নয়, এ স্থানের নৌকা দিয়ে কাফুলাবাড়ি, ভূতেরবাড়ি, জহরেরকান্দি, চলবল, নবগ্রামসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষ যাতায়াত করেন বলে জানিয়েছেন সাবেক ইউপি সদস্য ফান্সীস বৈদ্য। তিনি বলেন, 'ছোট্ট খেয়া দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করতে হয়। এ নদ পার হতে গিয়ে নৌকাডুবিতে আমার স্কুলপড়ূয়া মেয়ে লিথা বৈদ্যের মৃত্যু হয়েছে।' এ স্থানে সেতু নির্মাণের দাবি তাঁর।

স্বপন মধু বলেন, '২ বছর আগে এ স্থানে নৌকা ডুবে আমার স্কুলপড়ূয়া মেয়ে কবিতা মধু মারা যায়।' তাঁর ভাষ্যমতে, ২ বছরে বৃদ্ধ সুরেশ হালদার, বিশ্বনাথ বাড়ৈ, প্রতিবন্ধী মিনী মুন্সীসহ ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

খেয়ার মাঝি শাওন গাইন জানান, নৌকা দিয়ে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ লোক যাতায়াত করেন। সকাল ও বিকেলে প্রচুর ভিড় হয়। এ সময়ে শিক্ষার্থীরা নৌকায় পার হন। অনেক সময় অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে।

শৌলদাহ মুশুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী রাত্রী বিশ্বাস বলে, 'বাধ্য হয়ে আমরা খেয়া পার হয়ে স্কুলে যাই।'

অভিভাবক মমতা জয়ধর জানান, গত কয়েক বছরে এ নদে একাধিক নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। অনেক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে বাড়িতে না ফেরা পর্যন্ত চিন্তায় থাকেন অভিভাবকগণ।

রামশীল ইউপি চেয়ারম্যান শ্যামল কান্তি বিশ্বাস বলেন, এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে এ খেয়াঘাটে সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন। এ বিষয়ে একাধিকবার উপজেলার সমন্বয় সভায় জানানো হয়েছে।

ইউএনও ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, সেতু নির্মাণের বিষয়ে সমীক্ষা করার জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে নির্দেশ দিয়েছেন।