সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী বাঁশতলা (হকনগর) এলাকায় অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলনে টিলা ও সমতল ভূমি খুবলে খাচ্ছে বেপরোয়া সিন্ডিকেট। কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না প্রভাবশালী এ অসাধু চক্রের অপকর্ম। অনিয়ন্ত্রিতভাবে বালু-পাথর উত্তোলন করায় এ অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা ভরে গেছে অসংখ্য খানাখন্দে। কয়েক দিন আগেও যেখানে ছিল উঁচু টিলা, সেখানে এখন ছোট-বড় ডোবায় ভরা।
স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যবসায়ী দরিদ্র দিনমজুরদের দিয়ে এসব বালু-পাথর উত্তোলন করাচ্ছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, মাঝেমধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান চালানো হলে গা ঢাকা দেন তাঁরা। পরিস্থিতি একটু শান্ত হলেই আবার খুবলে খেতে শুরু করেন বালু-পাথর।
বৃহস্পতিবার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের বাঁশতলা শহীদ স্মৃতিসৌধ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ঘরবাড়ির পাশে অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত। সাংবাদিকদের দেখে বেশ কয়েকজন শ্রমিক বালু তোলা রেখে সরে পড়েন। বালু তোলার কাজ করতে থাকা সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা দিনমজুর সালাম মিয়া ও সফিক আলী জানান, তাঁরা সাধারণ দিনমজুর। পেটের দায়ে কাজ করেন।
স্থানীয় কয়েকজন শ্রমিকের দেওয়া তথ্যমতে, উত্তোলনকৃত বালু-পাথর দিয়ে জুমগাঁও, হকনগর বাজার, বাঁশতলা এলাকায় ডাম্পিং করা হয়। পরে সেখান থেকে নেওয়া হয় ছাতকসহ বিভিন্ন এলাকায়। এসব অবৈধ বালু-পাথর উত্তোলনে কে বা কারা জড়িত- এ বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি তাঁদের কেউ।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু-পাথর উত্তোলনের ফলে স্মৃতিসৌধ এলাকার পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও একটি চক্র প্রকাশ্যেই প্রতিনিয়ত বালু ও পাথর উত্তোলন করে যাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যবসায়ী জানান, ক্ষমতাসীন দলের একাধিক প্রভাবশালী নেতার ছত্রচ্ছায়ায় চলছে এসব কাজ। খবর পেয়ে প্রশাসনের লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই অপরাধীরা সরে যায়। বিশেষ করে মৌলা নদী, চিলাইপাড় ও খাসিয়ামারা নদীতে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা প্রিয়াংকা জানান, প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা সুচতুরভাবে এ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, 'এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসন ও বিজিবির সঙ্গে কথা বলে প্রায়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'