- সারাদেশ
- কার্যাদেশ বাতিলের পরেও...
কার্যাদেশ বাতিলের পরেও...

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বীরনিবাস নির্মাণকাজে অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সংশ্নিষ্ট ঠিকাদার মেসার্স জব্বার বিল্ডার্সের চুক্তিপত্রসহ কার্যাদেশ ও জামানত বাতিল করা হলেও চুন্নু মিয়া নামে এক ব্যক্তি প্রভাব খাটিয়ে এখনও কয়েকটি বীরনিবাস নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ ঘটনায় হতাশ ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলো চুন্নু মিয়ার কর্মকাণ্ড ও ক্ষমতার উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তারা জানায়, যদিও ইউএনও বলেছিলেন ফের টেন্ডার করে অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করা হবে।
ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলায় ১ কোটি ২০ লাখ ৫৫৯ টাকা ব্যয়ে ৯টি বীরনিবাস নির্মাণের কাজ পেয়েছিল মেসার্স জব্বার বিল্ডার্স। সেই কাজ করতে দেখা যায় চুন্নু মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে। কাজের শুরু থেকে চুন্নু নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করায় মোদাহরপুর গ্রামের উপকারভোগী প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা লাল মিয়ার স্ত্রী আমিনা ও অপর প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম ওমর ফারুকের ছেলে হাবিবে দুজাহান ইউএনওর কাছে অভিযোগ করেন। ইউএনও কাজ পরিদর্শন করে অভিযোগের সত্যতাও পান।
এদিকে অভিযোগ করার কারণে ওই দুটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য নির্ধারিত বীরনিবাসের কাজ ২৯ মার্চ বন্ধ করে দেন চুন্নু। পরে ১ সেপ্টেম্বর হাবিবে দুজাহান উপকারভোগীদের পক্ষ থেকে এর প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে ১৮ অক্টোবর ইউএনও এক চিঠিতে ওই ঠিকাদারের কার্যাদেশ ও জামানত বাতিল করেন।
গত বৃহস্পতিবার উপজেলার কামলাবাজ গ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বীরনিবাসের কাজ চলমান। দু'জন শ্রমিক টাইলস বসানোর কাজ করছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কার্যাদেশ বাতিলের পরেও মির্জাপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদির, খলাপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী শামস উদ্দিনসহ আরও কয়েকটি বীরনিবাস নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন চুন্নু মিয়া।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন বলেন, 'চুন্নু কীভাবে জানি আবারও কাজ নিয়ে এসেছে।'
হাবিবে দুজাহান বলেন, 'কার্যাদেশ ও জামানত বাতিল হওয়ায় খুশি হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম অন্তত এবার আমাদের ঘরের কাজ শুরু হবে। দেখলাম চুন্নু প্রভাব খাটিয়ে ঠিকই কাজ অব্যাহত রেখেছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক।'
ইউএনও মুনতাসির হাসান বলেন, 'চুন্নু যদি সেখানে কাজ করায় তাহলে সেটি তার ব্যক্তিগত। এ জন্য তাকে কোনো বিল দেওয়া হবে না।'
মন্তব্য করুন