গাজীপুরের টঙ্গী বাজারের একটি দোকানে কাজ করেন রুহুল আমিন। তাঁর বাড়ি চেরাগআলী এলাকায়। প্রতিদিন কর্মস্থলে যেতে ব্যবহার করতে হয় টঙ্গীর মিলগেট এলাকার লামাবাজার-চেরাগআলী সংযোগ সড়ক। ওই সড়কের একাংশ দখল করে গড়ে ওঠা তুলা ও ঝুটের গুদামের কারণে শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা হচ্ছে রুহুলের। একই রকম সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন প্রতিদিন ওই সড়ক ব্যবহার করা পথচারীরা।

রুহুল বলেন, ব্যবসায়ীরা অধিকাংশ সময়ই রাস্তার ওপরই তুলা ও ঝুট গোছানোর কাজ করেন। এতে নাকে-মুখে ঢুকে যায় ক্ষুদ্র কণা। যে কারণে তাঁর মতো পথচারীদের নাক-মুখ চেপে চলাচল করতে হয়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বারবার এ বিষয়ে অভিযোগ করার পরও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। মাস দেড়েক আগে একবার পুলিশ ওই দোকানগুলোর চাবি নিয়ে যায়।

সরেজমিন দেখা গেছে, লামাবাজার-চেরাগআলী সংযোগ সড়কটির এক পাশের বিশাল জায়গা দখল করে তৈরি করা হয়েছে শতাধিক দোকান। এর মধ্যে কেউ শুধু টিন দিয়ে দোকানঘর তৈরি করেছেন, কেউ আবার মেঝে পাকা করে নিয়েছেন। এলোমেলো করে তুলা ও ঝুটের বস্তায় রাখা হয়েছে সড়কের ওপর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, স্থানীয় প্রভাবশালীদের হাত করে অবৈধভাবে এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন আবুল কালাম আবু, তাইজুল ইসলাম, হাকিম আলী, নূর হোসেন, দুলাল, বাবু ও আনোয়ার অনেক ব্যবসায়ী। বিভিন্ন কারখানায় বাতিল হওয়া সুতা বেচাকেনা করেন আবুল কালাম আবু। তিনি বলেন, প্রায় একশ ঘর রয়েছে এখানে। সবাই ঘর তোলায় তিনিও তুলেছেন।

তুলা ব্যবসায়ী তাইজুল ইসলামের ভাষ্য, 'অনেক বছর ধরে এখানে ব্যবসা করে আসছি। কেউ কিছু বলেনি।' দুই মাস আগে পুলিশ তাঁর গুদামের তালার চাবি নিয়ে যায়। রাস্তার কাজ শুরু হলে গুদাম সরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে চাবি নিয়ে এসেছেন।

টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বলেন, থানা থেকে (ব্যবসার) কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। গুদামে তালা মেরে দেওয়া হয়েছিল। স্থানীয় কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলে সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে উচ্ছেদের ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল হাসেম বলেন, 'আমি জানি না যে ঘর করেছে। তাঁরা আমার কাছে এসেছিলেন। এ সময় তাঁদের সঙ্গে কথা হয়েছে, ড্রেন করার পর যদি খালি জায়গা থাকে তারপর ঘর উঠাইতে। ওমরাহ হজে যাওয়ার পর তাঁরা ঘর উঠাইয়া ফেলছেন।'