ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন (২৮) ছয় দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজ হওয়ার পর ওই চিকিৎসকের পরিবারের সদস্যরা ও পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ-খবর নিয়ে কোনো সন্ধান পায়নি তার। 

গত ৮ নভেম্বর তিনি নিখোঁজ হন তিনি। এর দুইদিন পর গত ১০ নভেম্বর ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা মোহসিন উদ্দিন ফকির নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে ভাঙ্গা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। 

ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, গত ৮ নভেম্বর (মঙ্গলবার) দুপুর ২টা পর্যন্ত চিকিৎসক জাকির হোসেন ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগের দায়িত্ব শেষ করে হাসপাতাল ত্যাগ করেন। দিবাগত রাত ১২টা ৩ মিনিটে জাকির হোসেনের ব্যবহৃত মুঠোফোন থেকে তার স্ত্রীর ব্যবহৃত মুঠোফোনে খুদেবার্তার মাধ্যমে জানানো হয়, ‘বিদ্যুৎ নেই, (জাকির হোসেনের) মোবাইল ফোন যে কোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে।’ 

এর প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পর ভোর ৫টা ৫৪ মিনিটে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তার মুঠোফোনে জাকির হোসেনের মুঠোফোন থেকে খুদে বার্তার মাধ্যমে জানানো হয়, ‘শাশুড়ি অসুস্থ। জরুরি ঢাকায় যেতে হবে। আগামীকাল (১০ নভেম্বর) ফিরতে একটু দেরি হবে।’ 

মো. জাকির হোসেন মানিকগঞ্জ শহরের বনগ্রাম আবাসিক এলাকার ৪৫/১ বাড়ির বাসিন্দা মো. সামসুল আলম ও জেসমিন আক্তার দম্পতির ছেলে। তিনি এক সন্তানের বাবা। ৩৮ তম বিসিএসের মাধ্যমে ২০১৯ সালের ৮ ডিসেম্বর নবম গ্রেডে মনোনীত হয়ে ১১ ডিসেম্বর ভাঙ্গার তুজারপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সহকারী সার্জন হিসেবে যোগ দেন। তবে তুজারপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কোনো স্থাপনা না থাকায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়। সেই থেকে গত তিন বছর ধরে তিনি এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ছিলেন।

ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা মোহসিন উদ্দিন ফকির বলেন, ৯ নভেম্বর চিকিৎসক জাকির হোসেনের স্ত্রী আমাকে জানান তার স্বামী (জাকির হোসেন) রাতে বাসায় ফেরেননি। জাকির হোসেনের শাশুড়িও অসুস্থ নন। এরপর ১০ নভেম্বর পর্যন্ত জাকির হোসেনের কোনো খোঁজ না পেয়ে ভাঙ্গা থানায় জিডি করি। 

ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়ারুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসক জাকির হোসেনের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ভাঙ্গা থানায় একটি জিডি করেছেন। 

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ মো. হেলালউদ্দিন ভুইয়া বলেন, ওই চিকিৎসকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা সব থানায় তার ছবি সম্বলিত বার্তা পাঠিয়েছি। পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ ও র‍্যাব বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন। তবে এখন পর্যন্ত বলার মতো কোনো তথ্য আমাদের হাতে নেই।