খুলনায় প্রায় আড়াই বছর বন্ধ থাকার পর রাষ্ট্রায়ত্ত প্লাটিনাম জুট মিল ইজারার মাধ্যমে শিগগির চালু হতে পারে। এরই মধ্যে ইজারা নেওয়া প্রতিষ্ঠান ফরচুন গ্রুপ বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন-বিজেএমসিকে প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। এ ছাড়া খুলনা অঞ্চলে বন্ধ করে দেওয়া রাষ্ট্রায়ত্ত আরও সাত পাটকল ইজারার মাধ্যমে চালু করতে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। তবে মিল চালু না হওয়া পর্যন্ত সংশয় কাটছে না শ্রমিকদের।

বিজেএমসির খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের সমন্বয়কারী গোলাম রব্বানী জানান, প্লাটিনাম জুট মিল দুই বছরের জন্য ইজারা নিতে প্রায় ১০ কোটি ৪০ লাখ টাকা বিজেএমসিকে দিয়েছে ফরচুন গ্রুপ। শিগগির তাদের সঙ্গে বিজেএমসির চুক্তি হবে। এর পরই তাদের মিলটি বুঝিয়ে দেওয়া হবে। চলতি বছরের মধ্যে মিলটি চালু হতে পারে। 

প্লাটিনাম জুট মিলের প্রকল্প প্রধান মুরাদ হোসেন জানান, ইজারা নেওয়া প্রতিষ্ঠান পাঁচ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত এভাবে মিলটি চালাতে পারবে। ফরচুন গ্রুপ কয়েকটি শর্ত শিথিলের জন্য চিঠি দিয়েছে, সে বিষয়গুলো বিজেএমসি বিবেচনা করছে।

এদিকে মিলটি আবার কবে থেকে চালু হবে এবং বেতন কাঠামো কী হবে, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন মিলের শ্রমিকরা। সিরাজুল আলম ও খালেক গাজী নামে দু'জন শ্রমিক জানান, মিল বন্ধের পর গত আড়াই বছর ধরে তাঁরা বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি শুনে আসছেন। মিল চালু না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের সংশয় কাটছে না।

প্লাটিনাম জুট মিল সিবিএর সাবেক সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, ইজারার মাধ্যমে মিল চালুর পর আগের শ্রমিকদের নিয়োগ দেওয়া হবে কিনা এবং বেতন কাঠামো কী হবে, তা তাদের জানা নেই। তাঁদের দাবি, শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে যেন আগে কর্মরতদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। এ ছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত থাকাকালে যে বেতন কাঠামো ছিল, তা বহাল রাখার দাবিও জানান তিনি।

লোকসানের কারণ দেখিয়ে ২০২০ সালের ২ জুলাই খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকল বন্ধ করে দিয়েছিল সরকার। এতে বেকার হয়ে পড়েন প্রায় ৪১ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী। তখন ইজারার মাধ্যমে আধুনিকায়ন করে তিন মাসের মধ্যে মিলগুলো ফের চালু করার ঘোষণা দিয়েছিল বিজেএমসি। তবে এখনও কোনো মিল চালু হয়নি। প্লাটিনাম জুট মিল চালুর বিষয়ে আশার আলো দেখা গেলেও বন্ধ থাকা বাকি আট পাটকল নিয়ে অনিশ্চয়তা এখনও কাটেনি। দীর্ঘদিনেও মিলগুলো ইজারা দেওয়ার কার্যক্রম শেষ হয়নি।

এ বিষয়ে বিজেএমসির খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের সমন্বয়কারী গোলাম রব্বানী জানান, বন্ধ থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ক্রিসেন্ট, স্টার, খালিশপুর, দৌলতপুর, ইস্টার্ন, যশোরের জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিল ইজারা দেওয়ার জন্য সম্প্রতি দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দরপত্র জমাদানের শেষ সময় আগামী ৭ ডিসেম্বর। তিনি আরও জানান, এর আগে একাধিকবার দরপত্র আহ্বান করেও আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যায়নি। আর রাষ্ট্রায়ত্ত আলিম জুট মিলের মালিকানা নিয়ে মামলা হওয়ায় সেটি ইজারা দেওয়ার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়নি।