পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জ্যের কারণে দূষিত হচ্ছে পানি। ধ্বংস হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। কমছে মাটির উর্বরতা ও উৎপাদন। নদী ও খালের নাব্য হারিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি নগরের নিস্কাশন ব্যবস্থা (ড্রেনেজ সিস্টেম) অকেজো হয়ে পড়ছে। এ অপূরণীয় ক্ষতি ঠেকাতে গবেষণার মাধ্যমে এর বিকল্প বের করতে হবে। সোমবার 'প্লাস্টিকের অপূরণীয় দূষণ কমাতে টেকসই সক্ষমতা তৈরি (এসসিআইপি)' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব তথ্য তুলে ধরেন আলোচকরা।

নগরের হোটেল পেনিনসুলার জিনিয়া হলে এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের এসসিআইপি প্লাস্টিক প্রকল্প। জার্মানির বাউহাউস ইউনিভার্সিটি ভায়মারের সহযোগিতায় ও জার্মানির কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের নেচার কনজারভেশন অ্যান্ড নিউক্লিয়ার সেইফটি বিভাগের অর্থায়নে গবেষণা প্রকল্পটি পরিচালিত হচ্ছে।

গোলটেবিল বৈঠকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, প্লাস্টিক ও পলিথিনের ব্যবহার কমাতে বিকল্প নিয়ে গবেষণার প্রয়োজন। প্রাথমিক শিক্ষা থেকেই আমাদের শিশুদের প্লাস্টিক ও পলিথিনের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে হবে। প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে কাপড় ও পাটের ব্যাগের ব্যবহার বাড়াতে হবে। যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম অন্তত ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা পায়।

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য ও এসসিআইপি প্লাস্টিক প্রকল্পের বৈজ্ঞানিক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, পলিথিন-প্লাস্টিক সমুদ্র এলাকা ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করার পাশাপাশি একটি শহরের ড্রেনেজ সিস্টেমকে অকেজো করে দিচ্ছে। চট্টগ্রামের মতো শহরে এর প্রভাব অনেক বেশি।

চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্য পানির সঙ্গে মিশে এর গুণাগুণ নষ্টের সঙ্গে সঙ্গে পানিতে থাকা জীববৈচিত্র্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। নদী ও সাগরে এর পরিমাণ বেড়েই চলেছে। সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণার বিকল্প নেই।

এসসিআইপি প্লাস্টিক প্রকল্পের বৈজ্ঞানিক পরিচালক ও চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. ফারজানা রহমানের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন প্রজেক্ট লিডার জার্মানির বাউহাউস ইউনিভার্সিটি ভাইমারের অধ্যাপক ড. ইঞ্জ. এখার্ড ক্রাফট, চুয়েটের সাবেক উপাচার্য ও সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রকৌশলী অধ্যাপক মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক, চুয়েটের পুরকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মইনুল ইসলাম, এসসিআইপি প্লাস্টিক প্রকল্পের বৈজ্ঞানিক পরিচালক বৈজ্ঞানিক বিশেষজ্ঞ ও পুরকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আসিফুল হক, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এসসিআইপি প্লাস্টিক প্রকল্পের বৈজ্ঞানিক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রাফিজুল ইসলাম ও চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ।

গোলটেবিল বৈঠক পরিচালনা করেন প্রকল্পের বৈজ্ঞানিক বিশেষজ্ঞ ও পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. সুদীপ কুমার পাল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রকল্পের গবেষণা সহযোগী ফারজানা খান ও গবেষণা সহকারী তৃষা দাশ।

বিষয় : ড্রেনেজ সিস্টেম এসসিআইপি বৈঠক

মন্তব্য করুন