- সারাদেশ
- প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে যশোর শহরে উৎসবের আমেজ
প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে যশোর শহরে উৎসবের আমেজ

যশোর শহরে বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা উপলক্ষে সকাল থেকেই উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা গেছে। ছবি: সমকাল
প্রায় পাঁচ বছর পর বৃহস্পতিবার যশোরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যশোর শহরের শামস্-উল হুদা স্টেডিয়ামে জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে উৎসবের শহরে পরিণত হয়েছে যশোর। যশোর জেলা প্রশাসন ও দলীয় সূত্র জানিয়েছে, আজ সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারে যশোর মতিউর রহমান বিমানঘাঁটিতে এসে নেমেছেন। যশোর বিএএফ একাডেমিতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ পরিদর্শন মঞ্চে উপস্থিত হয়েছেন। এরপর তিনি যশোর শহরের জনসভায় যাবেন। সেখানে বেলা ২টার দিকে যশোর শামস্–উল হুদা স্টেডিয়ামে জনসভায় ভাষণ দেবেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় এ সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সভামঞ্চের সামনে জায়গা পেতে সকাল ৯টা থেকেই যশোর জেলার ৮ উপজেলাসহ আশেপাশে পাশের জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা আসছেন। অনেকে ব্যাগে করে দুপুরের খাবারও নিয়ে এসেছেন। রং-বেরংয়ের গেঞ্জি পরে আর লাল সবুজ শাড়ি পড়ে নেতাকর্মীরা যশোরের বিভিন্ন উপজেলা ছাড়াও আশেপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থল যশোর স্টেডিয়ামে আসতে শুরু করেছেন। এছাড়াও স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের অনুসারীদের ছবি সংবলিত গেঞ্জি পরে এরই মধ্যে নেতাকর্মীদের খণ্ড খণ্ড মিছিল জনসভায় জড়ো হতে শুরু করেছে। ব্যানারসহ মাথায় ব্যান্ড লাগানো নেতাকর্মীদের অনেকের হাতে শেখ হাসিনা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রহমানের প্ল্যাকার্ডও বহন করছেন।
মণিরামপুর থেকে জনসভায় আসা রহমত আলী বলেন, ‘বহুদিন পর প্রধানমন্ত্রী যশোরে আসছেন। তাঁকে দেখতে বহু মানুষ যাবে; তার বক্তব্য শুনবে। আমিও এসেছি। আসলে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে দেশে উন্নয়ন হয়। বিশেষ করে সাধারণ মানুষের অনেক উপকার হয়। তার বিকল্প নেই। আমরা আগামীতেও তাঁকে চাই।’
মাগুরা থেকে আসা সুজয় পাল বলেন, ‘আমরা এলাকার তিনটি বাসে করে এসেছি বুধবার বিকেলে। রাতেই যশোর শহরের একটি স্কুলে ছিলাম। আজ জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনব। দেখা যাক তিনি বৃহত্তর যশোরবাসীকে কী উপহার দেন। যদিও এই অঞ্চলের মানুষেন জন্য উনি এরই মধ্যে অনেককিছু করেছেন।’

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘পাঁচ বছর পর জননেত্রী শেখ হাসিনা যশোরে জনসভায় ভাষণ দিতে আসছেন। এই জনসভা সফল করতে আমরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি। সভাস্থলে প্রবেশের জন্যে আট থেকে ১০টি প্রবেশদ্বার খোলা হয়েছে। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সভায় আগতদের জন্যে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার ও পানির ব্যবস্থা রয়েছে।’
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর এবারের এই জনসভা হবে স্মরণকালের ঐতিহাসিক সেরা জনসভা। এই জনসভা শুধু স্টেডিয়ামেই হবে না; গোটা যশোর শহরই জনসভাস্থলে পরিণত হবে। এজন্যে টাউন হল মাঠসহ বিভিন্ন জায়গায় এলইডি বড় স্ক্রিন দেওয়া হয়েছে। ওই স্ক্রিনে প্রধামন্ত্রীর ভাষণ সরাসরি দেখানো হবে। খুলনা বিভাগের সাতটি জেলা থেকে কয়েক হাজার বাস আসবে। ওইসব বাস রাখার জন্যেও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ নির্ধারণ করা হয়েছে। আমরা আশা করছি, আট লাখের বেশি মানুষ জনসভায় যোগ দেবেন।’
প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যেও নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। যশোর উন্নয়নে একগুচ্ছ দাবি দাওয়া রয়েছে এখানকার বাসিন্দাদের।
যশোরের নাগরিক সমাজ এরই মধ্যে যশোর মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের নামে সাগরদাঁড়িতে সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, ভবদহের জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান, যশোর বিমানবন্দর আন্তর্জাতিকমানে উন্নীতকরণ ও সিটি করপোরেশনের দাবি নিয়ে মানববন্ধন ও সভা-সমাবেশ করে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে।
মন্তব্য করুন