রংপুরের গঙ্গাচড়ায় এক কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে পাঁচজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অন্যদিকে তারাগঞ্জে আরেক কিশোরীকে ধর্ষণের মামলায় একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এই দুই মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।

দুই মামলার মধ্যে গঙ্গাচড়া উপজেলার নরসিংহ মর্ণেয়ার কিশোরী শাহিনাকে (১৬) সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে আসামি আবুজার (২১), আব্দুল করিম (২২), নাজির হোসেন (২৫), আমিনুর রহমান (২২) ও আলমগীরকে (২০) আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক রোকনুজ্জামান। পাঁচ আসামির মধ্যে আলমগীর পলাতক।

মামলা সূত্রে জানা যায়, আবুজারের সঙ্গে শাহিনার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। শাহিনা প্রেমের সম্পর্কটি পরিবারসহ গ্রামাবাসীকে জানাবেন বলে হুমকি দেন। এতে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। ২০১৫ সালের ১৪ মে শাহিনাকে কৌশলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আবুজার ও তার বন্ধুরা শাহীনাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। এরপর তারা শাহিনাকে হত্যা করে মরদেহ বাড়ির পাশের ধানক্ষেতে রেখে পালিয়ে যায়। পরদিন খবর পেয়ে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় শাহীনার বাবা আইয়ুব আলী গঙ্গাচড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এম এ জাহাঙ্গীর আলম তুহিন সমকালকে বলেন, এ রায় ভবিষ্যতে এমন অপরাধ করা থেকে মানুষকে বিরত রাখবে।

এদিকে তারাগঞ্জের কাজীপাড়ার এক কিশোরী ধর্ষণের দায়ে আসামি মিঠুন শেখ ওরফে সবুজকে (২৬) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত-৩-এর বিচারক এম আলী আহমেদ। এ ছাড়া আসামিকে পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। এ সময় আসামি সবুজ আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত সবুজ বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর শেখেরহাট এলাকার মোজাহার শেখের ছেলে। এ মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ততা না থাকায় অপর চার আসামিকে খালাস প্রদান করেছেন আদালত।

মামলা সূত্রে জানা যায়,  ২০২০ সালের ৭ ডিসেম্বর তারাগঞ্জের কাজীপাড়ার এক কিশোরী ধর্ষণের শিকার হন। পূর্ব পরিচয়ের জেরে কিশোরীকে ওই দিন রাত ১০টার দিকে বাড়ির পাশের পুকুরপাড়ে ডেকে আনে সবুজ। এরপর তাকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায় সবুজ। এ ঘটনায় ২০২০ সালের ১১ ডিসেম্বর ওই কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে তারাগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্ত শেষে চলতি বছরের ২৯ মে সবুজসহ পাচঁজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা মমতাসির হাসান মাসুম। এর পর মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। এ মামলায় বাদী ও তার পরিবারসহ ১১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তাজিবুর রহমান লাইজু বলেন, বাদীপক্ষ ন্যায়বিচার পেয়েছে।