শ্রমিক সংগঠন ও ট্রেড ইউনিয়নগুলোর মধ্যে অনেক বিভক্তি রয়েছে। শ্রমিকদের অধিকার আদায় করতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এ ঐক্যই তাঁদের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে 'তাজরীন অগ্নিকাণ্ডের ১০ বছর ও শ্রমিকের সুরক্ষা' শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। তাজরীন ফ্যাশনস ট্র্যাজেডির ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), লাউডস ফাউন্ডেশন এবং সেফটি অ্যান্ড রাইটস যৌথভাবে এ আয়োজন করে।

সভায় বক্তারা বলেন, শ্রম আইনের কোনো বাস্তবিক প্রয়োগ নেই। অগ্নিকাণ্ডের ১০ বছর পূর্তি এমন এক পরিবেশে পালিত হচ্ছে, যখন দেশে সংক্রমণ থেকে শুরু করে সব ধরনের ঝুঁকি পাশ কাটিয়ে শ্রমিকদের নিয়মিত কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে। জীবন ও জীবিকা- এ দুইয়ের মধ্যে শ্রমিকরা তাঁদের জীবিকাকেই বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন। সভায় শ্রমিকদের আইনগত সুরক্ষা জোরদারের পাশাপাশি সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতেও আহ্বান জানানো হয়।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম বলেন, গার্মেন্ট মালিকরা এত বেশি প্রভাবশালী, তাঁদের বিচারের আওতায় আনা যায়নি। এ ব্যর্থতা ঘোচাতে হবে। তিনি বলেন, গার্মেন্টের দরজা বন্ধ থাকলে মালিকপক্ষ দায়ী থাকবে- এমন আইন আছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, দরজা বন্ধ থাকায় বেশি প্রাণহানি ঘটেছে।

কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার বিষয়টি 'খুবই গুরুত্বপূর্ণ' জানিয়ে বিশেষ অতিথি সংসদ সদস্য শামসুন্নাহার ভূঁইয়া বলেন, আমরা শ্রমিকদের সুরক্ষা চাই। আমরা চাই- তাঁদের অধিকার নিশ্চিত হোক। মনে রাখতে হবে, শ্রমিকের উন্নয়ন মানে অর্থনীতির উন্নয়ন, কারখানা মালিকদের উন্নয়ন। তিনি বলেন, শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিতে আইন করা প্রয়োজন। সরকারকে সেদিকেই নজর দিতে হবে। পাশাপাশি শ্রমিকদেরও তাঁদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে; ঐক্যবদ্ধ থেকে অধিকার আদায় করতে হবে।

সভায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ব্লাস্টের স্টাফ আইনজীবী সিফাত ই নূর খানম ও সেফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটির আইন কর্মকর্তা হাসিনা খানম। আরও বক্তব্য দেন এসআরএসের নির্বাহী পরিচালক সেকেন্দার আলী খান, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান, গার্মেন্ট শ্রমিক ঐক্য লীগের সভাপতি রহিমা আক্তার সাথী, ব্লাস্টের উপপরিচালক বরকত আলী প্রমুখ।