বগুড়ার গাবতলী ও সোনাতলা উপজেলা বিএনপির ৬৫ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ককটেল হামলার অভিযোগে আরও দুটি মামলা হয়েছে। আজ শনিবার সকালে সোনাতলা থানায় এবং গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে গাবতলী মডেল থানায় মামলা দুটি করা হয়। 

এ নিয়ে জেলায় ১২টি উপজেলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ১২টি মামলা দায়ের করা হলো। এতে স্থানীয় বিএনপির সভাপতি, সম্পাদকসহ প্রায় দেড় হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

গাবতলীতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বগুড়া শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফি নেওয়াজ খানের গাড়িবহরে ককটেল হামলার অভিযোগে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করা হয় শুক্রবার রাত আড়াইটার দিকে।  মামলাটি করেন গাবতলী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজার রহমান। মামলায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোরশেদ মিল্টন, সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক, গাবতলী পৌরসভার মেয়র সাইফুল ইসলামসহ ৩৬ আসামির নাম উল্লেখ করা হয়। 

গাবতলী মডেল থানার ওসি সনাতন কুমার বলেন, ককটেল বিস্ফোরণের বেশ কিছু আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

গাবতলী পৌর মেয়র ও বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি ঢাকায় এসেছি তিনদিন হয়। কারা ককটেল হামলা করল তাই জানি না। তবু আমাকে মামলায় জড়ানো হয়েছে।

সোনাতলায় পুলিশের ওপর ককটেল হামলার অভিযোগে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আহসানুল তৈয়ব জাকির, সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক নিপনসহ ২৯ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। আজ শনিবার সকাল আটটায় মামলাটি করেন সোনাতলা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নূর ইসলাম। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামির সংখ্যা আরও দেড় শতাধিক বলে উল্লেখ করা হয়। জব্দ দেখানো হয়েছে দুটি ককটেল। 

সোনাতলা থানায় করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, সোনাতলা থানা–পুলিশের একটি দল শুক্রবার রাতে টহলের জন্য বের হয়। রাত দেড়টার দিকে দলটি উপজেলা সদরে অবস্থানকালে খবর পায়, নাশকতার উদ্দেশ্যে বিএনপির নেতাকর্মীরা পৌরসভাধীন ঘোড়াপীর এলাকার জালাল উদ্দিন টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড বিএম কলেজ মাঠে জড়ো হয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। এ সময় তারা পুলিশের উপর ককটেল হামলা করে। ঘটনাস্থল থেকে দুটি ককটেল উদ্ধার এবং আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন, সোনাতলা পৌর বিএনপির সদস্য মাসুম সরকার ও শহিদুল ইসলাম এবং বালুয়া ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য মোহাম্মদ শাহিন। ককটেল হামলায় পুলিশের ২ সদস্য আহত হয় বলে মামলায় বলা হয়।

সোনাতলা থানার ওসি সৈকত হাসান বলেন, বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে নাশকতার পরিকল্পনা করছিল- এমন খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়, পরে তারা পুলিশের ওপর ককটেল হামলা করে।

সোনাতলা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক নিপন বলেন, আমি চারদিন যাবত ঢাকায় অবস্থান করছি। আমার এক আত্মীয়ের চিকিৎসা করাতে ঢাকায় এসেছি বুধবারে। এখনও ঢাকায় আছি। অথচ আমার বিরুদ্ধে শুক্রবার রাতে নাশকতা ঘটনার মিথ্যা মামলা দেয়া হলো। 

শুক্রবার সকালে জেলার শিবগঞ্জ ও সারিয়াকান্দি থানায় পৃথক ২টি মামলায় ৬৭ জনের নাম উল্লেখ করে প্রায় ২৫০ জনের নামে মামলা করা হয়েছে।   

শিবগঞ্জ থানায় দায়ের করা মামলার ২২ নম্বর আসামি আশরাফুল আলম বলেন, আমি বিএনপির কোনো পদে নেই, একজন সমর্থকমাত্র। আমি ঘটনার দিন রংপুর ছিলাম। অথচ আমার নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

তিনি দাবি করেন, একজন মাদকাসক্তকে দিয়ে ককটেল ফাটিয়ে বিএনপির ওপর দায় চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে।

জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা বলেন, ঢাকায় ও রাজশাহীতে গণসমাবেশে নেতাকর্মীরা যেন যেতে না পারে, সেজন্য এসব মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি অব্যাহত রেখেছে। গত ১০ দিনে ১২ মামলায় বিএনপির প্রায় দেড় হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।