শীত শুরু হতেই সুনামগঞ্জে বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগবালাই। শিশুরা সবচেয়ে বেশি ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হচ্ছে। সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ৮০ শয্যার শিশু ওয়ার্ডে গেল তিন দিনেই ভর্তি হয়েছে ২৬০ শিশু। একটি শয্যা তিন-চার রোগী ভাগাভাগি করছে। মেঝে ও বারান্দায় রেখেও অনেকে চিকিৎসা করাচ্ছেন। রোগীর চাপে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

চিকিৎসকরা বলছেন, শীতে সবসময় ঝুঁকিতে থাকে শিশুরা। এ জন্য তাদের সুরক্ষায় গরম কাপড় ব্যবহার করা জরুরি। ঠান্ডা দেখা দিলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

আজ শনিবার দুপুরে সরেজমিন সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ডে রোগী ও তাদের স্বজনে ঠাসা। শয্যা না পেয়ে অনেকে মেঝে ও ওয়ার্ডের বাইরে বারান্দায় বিছানা পেতে অবস্থান করছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, শিশু ওয়ার্ড দুটিতে শয্যা ৮০টি। গত তিন দিনে এক বছর বয়সী ওয়ার্ডে (নিওনেটাল) ৪২ এবং ১৪ বছর বয়সী ওয়ার্ডে ২১৮ শিশু ভর্তি হয়েছে। তারা সবাই নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত।

সুনামগঞ্জের বনগাঁও থেকে এক বছর বয়সী ছেলে মো. রাসেলকে নিয়ে আসা রাবেয়া খাতুন বলেন, তিন দিন ধরে হাসপাতালে আছি। আরও দুই শিশুর সঙ্গে ছেলেকে এক শয্যায় রেখেছি। শয্যা ভাগাভাগি করতে গিয়ে খুবই কষ্ট হচ্ছে। শিশু তাজিয়া খাতুনের মা জুলেখা খাতুন জানান, তাঁর মেয়ে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। এক শয্যায় একাধিক রোগী থাকায় দিনরাত বসেই কাটাতে হচ্ছে।

সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে দায়িত্বরত ডা. সৈকত দাস বলেন, জ্বর-কাশি হলে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে অধিকাংশ শিশু বাড়িতেই সুস্থ হতে পারে। কেবল নিউমোনিয়া হলেই হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়। শয্যার তুলনায় তিন গুণের বেশি রোগী হওয়ায় সেবা দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আনিছুর রহমান বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারণে এখন শিশুরা নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। আমরা সীমিত লোকবল নিয়েও সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। এ সময়ে অভিভাবকদের বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।