- সারাদেশ
- ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ, হাসপাতালে ভিড়
ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ, হাসপাতালে ভিড়

ফাইল ছবি
শীতের তীব্রতা এখনও তেমন শুরু হয়নি। তবে এখনই ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভিড় করছে শিশুরা। এরই মধ্যে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক ও শিশু ওয়ার্ডে ১১০ শয্যার বিপরীতে ভর্তি হয়েছে ৬১৩ জন। ধারণক্ষমতার চেয়ে অন্তত সাড়ে পাঁচগুণ বেশি রোগী ভর্তি রয়েছে।
শিশুদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সদের।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিনিয়ত শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। যদিও এক হাজার শয্যার হাসপাতালে প্রতিদিন তিন থেকে চার হাজার রোগী ভর্তি থেকে চিকিৎসা নেন। বৃহত্তর ময়মনসিংহ, রংপুর, কুড়িগ্রাম, সিলেট, সুনামগঞ্জ এলাকার রোগীদের ভরসার চিকিৎসালয় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। শীত মৌসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গে শিশুদের ঠান্ডাজনিত শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া ও অন্যান্য রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে বিভিন্ন এলাকায়।
হাসপাতালের পরিসংখ্যান বলছে, গতকাল রোববার দুপুর পর্যন্ত নবজাতক ও শিশু ওয়ার্ডের ১১০ শয্যার বিপরীতে ভর্তি ছিল ৬১৩ জন। এর মধ্যে শেখ রাসেল স্ক্যানু (এনআইসিইউ) ওয়ার্ডে শয্যা ৫০টি। এখানে ভর্তি ছিল ২০৪ নবজাতক। হাসপাতালের ৩০ ও ৩১ নম্বর শিশু ওয়ার্ডে ৬০ শয্যার বিপরীতে ভর্তি ছিল ৪০৯ জন।
গত এক সপ্তাহে নবজাতক ওয়ার্ডে ১ হাজার ৩৫৩ নবজাতক ভর্তি হয়। এর মধ্যে ৭৪ জনের মৃত্যু হয়। অপরিণত বয়সে জন্ম, ওজন কম, স্বাভাবিক প্রসব করতে গিয়ে মাথায় চাপ খাওয়ার কারণে এসব শিশুর মৃত্যু হয়। এই মৃত্যু স্বাভাবিক এবং প্রতিদিন গড়ে ৮-১২ নবজাতকের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এ ছাড়া রোববার দুপুর পর্যন্ত গত সাত দিনে হাসপাতালের ৩০ ও ৩১ নম্বর শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিয়েছে ২ হাজার ৮৭৭ শিশু। এর মধ্যে মারা গেছে ২২ শিশু।
শীতের শুরুতে বিপুলসংখ্যক শিশু রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। শেরপুর থেকে দেড় বছর বয়সী ইরাদকে নিয়ে এসেছেন লাভলু মিয়া। তিনি বলেন, বাচ্চার পাতলা পায়খানা ও সর্দিজ্বর হলে এখানে ভর্তি করা হয়েছে। এখন ইরাদ অনেকটা ভালোর দিকে। ইরাদের মতো অনেক শিশু নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। শয্যায় ঠাঁই না হওয়ায় মেঝে ও ওয়ার্ডের সামনের বারান্দায় শিশুদের নিয়ে থাকছেন অভিভাবকরা।
শেখ রাসেল স্ক্যানু ওয়ার্ডের বিভাগীয় প্রধান নজরুল ইসলাম বলেন, নবজাতক ওয়ার্ডে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ জনের মৃত্যু হয়। এর কারণ জন্মের সময় ওজন কম, প্রসবের সময় জটিলতা, জন্মের সময় মাথায় চাপ খাওয়া, জন্ডিস, জন্মগত অন্যান্য ত্রুটি। ঠান্ডাজনিত রোগে বড় বাচ্চাও মারা যায়। কোনো নবজাতক নিউমোনিয়ায় মারা যায়নি।
হাসপাতালের উপপরিচালক ওয়ায়েজ উদ্দিন ফরাজী জানান, নবজাতক ওয়ার্ডে শয্যার চারগুণ রোগী সবসময় থাকে। শিশু ওয়ার্ডে শয্যার অন্তত ছয়গুণ রোগী থাকে। নবজাতক ওয়ার্ডে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব না হওয়া জটিল শিশুদের নিয়ে আসা হয়। বিকল্প না থাকায় এখানে ভর্তি করতে হয়। ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশু ওয়ার্ডের সামাল দিতে ওষুধ, অক্সিজেন ও নেবুলাইজার পর্যাপ্ত পরিমাণ রয়েছে। সীমিতি জনবল দিয়েই সামাল দিতে হচ্ছে। রোগী বাড়লে চাপ সামলানোর প্রস্তুতিও রয়েছে তাঁদের।
মন্তব্য করুন