আগৈলঝাড়ায় ২৯ লাখ টাকা মূল্যের কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনটি খোলা জায়গায় অকেজো অবস্থায় পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। পাওনা টাকা পরিশোধ না করায় মেশিনটির যন্ত্রাংশ খুলে নিয়েছে কোম্পানি।
মেশিনটি কিনতে সরকার ভর্তুকি দিয়েছে ১৪ লাখ টাকা; কৃষক দিয়েছেন ৮লাখ। এর পরও এসিআই কোম্পানি দাবি করছে আরও ৯ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। তাদের দাবি করা টাকা পরিশোধ না করলে মামলা করার হুমকি দিয়েছেন এসিআই কোম্পানির বরিশাল জেলার কর্মকর্তারা।
উপজেলার রত্নপুর ইউনিয়নের নাঘার গ্রামের স্বপন বল্লভের ছেলে কৃষক বাদল বল্লভ, একই এলাকার যতীন্দ্রনাথ মুহুরীর ছেলে উত্তম মুহুরী যৌথভাবে ২০২১ সালের ১২ এপ্রিল ধান কাটা-মাড়াই করতে এসিআই কোম্পানির ইয়ানমার-৬০০-ই মডেলের মেশিন উপজেলা কৃষি অফিস থেকে নেন। ২৯ লাখ টাকার মধ্যে সরকার এই মেশিনের জন্য ভর্তুকি দেয় ১৪ লাখ টাকা। বাকি ১৫ লাখ টাকার মধ্যে ৫ লাখ টাকা কৃষকরা অগ্রিম দেন। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে মেশিনটি গ্রহণ করেন কৃষক বাদল ও উত্তম। ২০২১ সালে বিভিন্ন এলাকার ধান কেটে ৩ লাখ টাকা কিস্তিতে পরিশোধ করেন তাঁরা। তখন আকস্মিক বন্যায় জমিতে পানি জমে যাওয়ায় ধান কাটতে না পারায় কিস্তি দিতে পারেননি কৃষকরা। এ কারণে ১৫ মে এসিআই কোম্পানির বরিশাল জোনাল অফিসের রিকভারি অফিসার মামুনুর রহমান উপজেলা কৃষি অফিসকে না জানিয়ে মেশিনের ইসিইউ যন্ত্রটি খুলে নেন। এ সময় কৃষক বাদল মেশিনটি স্কুল মাঠ থেকে ঘরে নেওয়ার অনুরোধ করলে মামুনুর বাধা দেন। তাই মেশিন চালু করা যাচ্ছে না। এর পর থেকে এটি মাঠে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে।
মেশিনটি মেরামত করতে লক্ষাধিক টাকা প্রয়োজন হবে বলে জানান বাদল বল্লভ। তাই এটি এখন কৃষকের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাদল বল্লভ জানান, তাঁরা ৮ লাখ টাকা পরিশোধ করেছেন। আর ৭ লাখ টাকা পাওনা থাকলেও এসিআই কোম্পানির বরিশাল জোনাল অফিস ৯ লাখ ৫৩ হাজার টাকা পাওনা বলে দাবি করছে। এ টাকা পরিশোধ না করলে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দিচ্ছে কোম্পানি।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায় বলেন, মেশিনের যন্ত্রাংশ খুলে নেওয়ার ঘটনা তাঁকে কেউ জানায়নি।
এসিআই কোম্পানির বরিশাল জোনাল অফিসের রিকভারি অফিসার খোরশেদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, প্রধান কার্যালয় থেকে তাঁদের বক্তব্য দিতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে তিনি বলেন, কৃষক বাদল বল্লভ ও উত্তম মুহুরী বরিশাল অফিসে এলে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করা হবে।